পার্টিক্যাল ফিজিক্সের কিছু এপেন্ডিক্স: সোজা বাংলায় কিছু জিনিস জানা!

0
948
Particles collide during a CERN experiment. How does the Higgs Boson work?

পার্টিকেল ফিজিক্স বা কণা পদার্থবিজ্ঞানে অনেকেরই আগ্রহ আছে, কিন্তু এই বিষয়ক কোনো প্রবন্ধ পড়তে গেলে অনেকেরই নতুন নতুন পরিভাষার সামনে পড়তে হয়, ফলে লেখাটি বোঝা দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। আজ এখানে তাই পার্টিকেল ফিজিক্সের কিছু কৌতুহলোদ্দীপক পরিভাষা নিয়ে আলোচনা করা হলো। আমার পরবর্তী প্রবন্ধের জন্যও এই পরিভাষাগুলো কাজে লাগবে।

হিগস বোসন:

আইনস্টাইন বলেছেন কোনো ভরযুক্ত বস্তু আলোর গতিতে ছুটতে পারবে না, যদি ছোটার চেষ্টা করে তালে তার ভর বাড়তে থাকবে। তার মানে আলোর গতিতে যেতে হলে তার ভর অসীমের কাছে হতে হবে। এগুলোকে ভরযুক্ত কণিকা বলে। এখন প্রশ্ন হলো এই ম্যাসিভ বা ভরযুক্ত কনিকা কিভাবে হয়? হিগস সাহেব বলেন যে হিগেস ক্ষেত্রে (হিগসের মতে এই মহাবিশ্ব পুরোটাই শূন্য, এর মধ্যে মহাবিশ্বের বিভিন্ন সময়ে যেমন বিগ ব্যাং এর পর-পর এর শক্তির মাত্রা ছিলো অনেক বেশি, এখন অনেক কম, এই বিবর্তনে শক্তি রূপান্তরিত হয়ে ভর, কনিকা ইত্যাদি হয়েছে এবং এর মধ্যে কোনো কোনো কনিকা ভর না না নিয়ে গতি নিয়েছে আবার কেউ কেউ গতি না নিয়ে ভর নিয়েছে, এই সর্বময় শূন্যতাটাই হলো হিগের ক্ষেত্র: সোজা বাংলায় যদি বলতে হয় তবে  (এইখানে কেউ আবার পল ডিরাকের শূন্যাস্হান নিয়া বিভ্রান্তিতে যেন না পড়েন) এইসব মৌলিক কনিকা ধীর গতি প্রাপ্ত হয় যেমনটা খড়ের গাদায় গুলি করলে তার গতি কমে যায়। এইসব কনিকাগুলোই আলোর গতির কমে ঘোরা ফেরা করে আর অন্যান্য গুলো আলোর গতিতে চলে; যেমন আলোর ফোটন, যেগুলার উপর হিগস ক্ষেত্রের কোনো প্রভাব নাই।

যদিও সোজা রাস্তায় হিগের ক্ষেত্র মাপা যায় না, তবে ত্বরণযন্ত্রগুলো এই ফিল্ডকে উত্তেজিত করে হিগস বোসন কনিকাগুলো ধরতে পারে যেটা এখনও বাস্তবে করা যায়নি!

W বোসন

১৯৮২ এর আগস্টে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থেচার সার্নে গিয়ে একটি আবেদন করেন, তখন ওখানে দুর্বল তড়িৎশক্তির হোতাদের খোঁজা হচ্ছিলো। তো তিনি গিয়ে আবেদন করেন যেনো তাঁকে শপার গেভ থেচারের ফেলো সায়েন্টিস্ট হিসাবে সমাদৃত করা হয়। যাই হোক, সেখানে যখন W বোসন কণিকাকে পাওয়া গেলো তখন বুঝা গেলো এই কণিকা আর সাথের Z বোসন দুর্বল তড়িৎশক্তি(নিউক্লিয় বল) আর তেজস্ক্রিয়তার ক্ষয়ের জন্য দায়ী!

তখন ত্বরণযন্ত্রে প্রোটন-এন্টি প্রোটনের সংঘর্ষের ফলে যেইসব সিগন্যাল পাওয়া যাচ্ছিলো তা নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছিলো। শপার থেচারকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে তাঁরা এই কনিকাকে পেলেই তাঁকে পত্র চিঠি দিয়ে জানাবেন (তখন তো আর মোবাইল বা মাইক্রোফসট আউটলুক কোনোটাই ছিলো না)।যখন পাওয়া গেলো তখন শপার এই ইকুয়েশন W+ → e+ +ν লিখে পাঠান যে তাঁরা W বোসনের ধনাত্মক ক্ষয় হিসাবে পজিট্রন আর নিউট্রিনো খুঁজে পেয়েছেন! সার্নের এই পর্যবেক্ষণের জন্য প্রায় নয়টি ইভেন্ট রেকর্ড করতে হয় এবং পরে যখন হিসাব করা হয় তখন দেখা যায় এই কনিকা এর আগে খুঁজে পাওয়া যে কোনো মৌলিক কনিকার চেয়ে ১৫ গুন ভারী!

Z বোসন:
১৯৮৩ এর মে তে CERN এর UA1 এ এই কনিকার প্রথম উপস্থিতি সনাক্ত হয়। এটার তড়িৎচার্জ বিশিষ্ট কাজিন অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট একটা W বোসনকে এর কয়েকমাস আগে খোঁজ পাওয়া যায়। এই W আর Z মিলেই এই দুর্বল তড়িৎচার্জ বহন করে তাই এটা নিয়ে ভরের জন্য বোসনের সাথে কনফিউজ হওয়ার কারন নেই।

বিজ্ঞানী জেমস রোলফ একটি ১২ মিনিটের হিসাব দেখান যেটা আমি এই পোস্টের পরবর্তী সংস্করন দেওয়ার সময় ওখানে উল্লেখ করা হবে। পরে অবশ্য UA2 তে এটার কোলাবরেশন দেখা হয়।

সুপার সিমেট্রি মানে অতি প্রতিসাম্য
এটা একটা বৈশিষ্ট্য। ধরুন আপনার যখন জন্ম হয়েছে তখন দেখা গেলো আপনের জমজেরও জন্ম হয়েছে। মহাবিশ্বের সবকিছু জোড়া্য় এই তত্ব অনুসারে প্রতিটা কনিকার একখানা ভারী জোড় থাকবে যেটার সাথে কিছু স্বতন্ত্র পার্থক্য থাকবে কিন্তু তারা একেকটা করে জোড়া। সকল পার্টিক্যাল গুলোকেই দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে ফার্মিওন আর বোসন; সেই হিসাবে একটা ইলেক্ট্রনের (ফার্মিওন) জোড় হলো একটা সিলেক্ট্রন (বোসন)।
এই তত্বটা সব কনিকার গতি ব্যাখ্যা করে, তার কিভাবে একে অপরের সাথে মিথষ্ক্রিয়ায় এই মহাবিশ্বের ভীত গড়েছে সেটা বলে, যদিও আমরা এখনও মৌলিক কনিকা গুলোই খুঁজা পাইনি, এর জোড় গুলো খজা এই তত্বের সত্যতার পিছনে দৌড়াদৌড়ি অনেক দুরের বিষয়! তবে বিজ্ঞানিরা সন্দেহ করেন এইসব অদেখা জোড়গুলো দিয়েই ডার্ক ম্যাটারের কর্মকান্ড।

কোয়ার্ক:
কোয়র্ক হলো বস্তুর মৌলিক গাঠনিক কণিকা। প্রোটন নিউট্রনের ভিতরে কোয়ার্ক পাওয়া যায় যেগুলো দিয়ে এই মহাবিশ্বের সকল পরমাণুর নিউক্লিয়াস তৈরী। সাম্প্রতিক পরীক্ষা থেকে বোঝা যায় কোয়ার্ককে আর ভাগ করা যায় না, অর্থাৎ এটা প্রকৃতই মূল কণিকা!

প্রোটন এবং নিউট্রনে দুই ধরনের কোয়ার্ক আছে যেগুলোকে বলা হয় উপর আর নীচ কোয়ার্ক (up এবং down quark)। কেন জানি না, প্রকৃতি এই উপর-নীচ ঘূর্নির কোয়ার্কের আবার ২টা  করা কপি তৈরি করেছে (কেউ জানলে আমাকে জানাবেন)। পার্থক্য একটাই এদের ভর বেশী। উপর ঘূর্নীর কোয়ার্কের অপেক্ষাকৃত ভারী ফটোকপির অবস্হা হলো একখান আকর্ষক (নাম দেওয়া হয়েছে চার্ম, বাংলায় এর এই অর্থ করার কারন আছে); আরেকটা উপর কোয়ার্ক আর নীচ কোয়ার্কের কপি দুইটার অবস্হা হইলো অদ্ভূত (strange, স্ট্রেন্জ্ঞ) কোয়ার্ক। শক্তিjc ভরে রূপান্তর করার মাধ্যমেই এই ভারী ভারী কোয়ার্কের সৃষ্টি করা হয় ত্বরণযন্ত্রে। তবে কিছু কিছু কোয়ার্কের এত ওজনদারীত্বের কাহিনী কি জন্য সেটার সম্ভাব্য ব্যাখ্যা আমি জানি না!

সিপি ভায়োলেশন (CP violation)
পদার্থবিজ্ঞানীরা এই চার্জ প্যারিটি (charge-parity বা cp) অর্থাৎ তড়িৎ মানের তারতম্য ব্যাবহার করেন কনিকা-প্রতিকনিকার প্রতিসাম্যতা (ম্যাটার-এন্টম্যাটার সিমেট্রি (matter-antimatter symmetry): সিমেট্রি হলো প্রতিসাম্য,  এই ক্ষেত্রে একটি কণিকা আরেকটির দর্পন প্রতিবিম্ব (আয়নায় যেমন দেখা যায়, সবই এক কিন্তু পাশ পরিবর্তিত), ম্যাটার এন্টিম্যাটারে সবকিছুই একই শুধু চার্জ বিপরীত বোঝাতে প্রতিসাম্য ব্যবহৃত হয়। যদি প্রকৃতিতে কনিকা-প্রতিকনিকার একই ভাবে অর্থাৎ প্রতিসাম্যতার মাধ্যমে ব্যাবহার করে তাইলে সিপি প্রতিসাম্য হবে; আর তা না হলে হবে সিপি ভায়োলেশন বা অবমাননা!

পরীক্ষায় দেখা গেছে প্রকৃতির দূর্বল বলে (যেটা কনিকার ক্ষয়ের জন্য দায়ী) সিপি ভায়োলেশন আছে, কেন আছে আমি বুঝিনি পরীক্ষকেরা কি বলেছে এর পরিপ্রেক্ষিতে উল্লেখ করছি।

বিগব্যাং এর হওয়ার সময় ম্যাটার-এন্টিম্যাটারর সমান সংখ্যক পরিমানের মিথষ্ক্রিয়া হওয়ার কথা ছিলো কিন্তু আজ অবধি যত গ্যালাক্সি আর অন্যান্য বস্তু পাওয়া গেছে সবই ম্যাটার দিয়ে তৈরি, এন্টি ম্যাটার তাহলে গেলো কোথায়? মনে হতে পারে বিগ ব্যাং এর পর হয়তো কোনো শক্তি এই এন্টি ম্যাটার ঝাড়ু দিয়ে নিয়ে গেছে যার ফলে এই সিপি ভায়োলেশন প্রতিসাম্যতা ভন্ডুল করেছে। এখন কোন কারনে সিপি ভায়োলেশন হলো আর স্ট্যান্ডার্ড মডেলের অনুল্লেখিত কোন শক্তি এর জন্য দায়ী আমি জানি না, পার্টিক্যাল ত্বরণ যন্ত্র ছাড়া এই উত্তর মনে হয় কেউই দিতে পারবে না!

অতিরিক্ত মাত্রা
সায়েন্স ফিকশন মনে হলেও যদি আসলেই আমাদের বাস্তব পৃথিবীতে এসবের সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায় তাহলে আমরা বুঝতে পারব কেনো মহাবিশ্ব আমরা যেমন ভাবি তার চেয়েও দ্রুত গতিতে সম্প্রসারণ হচ্ছে আর কেনইবা গ্রাভিটি নামক বল অন্যান্য বলের চেয়ে এতো কম শক্তিশালী!

তিনটা স্হানিক মাত্রা তো চোখের সামনেই। আইনস্টাইনের জেনারেল রিলেটিভিটি বলে স্হান সম্প্রসারিত, বাঁকা এবং সংকুচিত হতে পারে। যদি কোনো একদিকে সংকুচিত হয়ে এমন ছোট আকার হয়ে যায় যেটা আমাদের দৃস্টিসীমার বাইরে, ধরা যাক একটা পরমাণুর চেয়েও ছোট, তাহলে আমরা দেখি না। যদি আমরা দেখতি পারি তাহলে এইসব সুপ্ত মাত্রা চোখে দেখা সম্ভব।
একটা উদাহরন দিই, সার্কাসে দেখবেন দড়ির উপর দিয়ে কোনো মানুষ হেঁটে যায় তখন সে কেবল সামনে পিছনে যেতে পারে, ডানে, বাঁয়ে বা উপর নীচে যেতে পারে না। অথচ ঐ দড়িতে যদি একটি পিঁপড়া ছেড়ে দেন তাইলে দেখবেন পিঁপড়া সামনে-পেছনে, ডানে-বাঁয়ে উপর নীচে সব জায়গায় যায়! এখন কি বুঝাতে পারছি সমস্যা কোথায়? দারুন, তাই না?

স্ট্রিং থিওরীতে এই অতিরিক্ত মাত্রার প্রয়োজন পড়ে। আর যদি আমরা ভাগ্যবান হই তাহলে আমরা এগুলো খুঁজে পাবো সামনের পরীক্ষাগুলোতে অথবা দূরের সেই অক্ষত মহাবিশ্বের জন্মলগ্ন কসমোলজীর চেহারায় আর যদি তা পারি তাহলে এটাও ভালো ভাবে বলতে পারি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে কিভাবে মহাবিশ্ব বেড়েই চলছে!

ডার্ক এনার্জী
এই বিষয়টা হলো এই মহাবিশ্বের সবচেয়ে আজব চিড়িয়া। এর হাতেই লুকিয়ে আছে মহাবিশ্ব কিভাবে বাড়ছে আর আমাদের মহাবিশ্বের আসলে কি হবে, যদিও আমরা এটা সম্পর্কে তেমন কিছু জানি না!

এটা সবজায়গায় আছে আর খুব ভালো ভাবে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়। ১ ঘন মিটারে এক অনু হাইড্রোজেন পরমানুর সমান শক্তি থাকতে পারে এবং এটা কোনো কনিকার দ্বারা সৃষ্ট নয়। এটা একটা ধারাবাহিক এবং ইলাস্টিক টাইপের মাধ্যম যার মধ্যমে আমরা একটা দারুন জিনিস জানতে পারি: এর গ্রাভিটি আকর্ষনের চেয়ে বিকর্ষন ভালো করে। বিগ ব্যাং এর প্রথম ৯ বিলিয়ন বছর মহাবিশ্বের সম্প্রসারন ঠেকিয়েছে গ্রাভিটির আকর্ষন। পাঁচ বিলিয়ন বছর ধরে এই ডার্ক এনার্জি গ্রাভিটির উপর টেক্কা মেরে আবারও মহাবিশ্বের পরিবর্ধন শুরু করেছে!

পদার্থবিদদের জন্য এটির খুঁটিনাটি খুঁজে বের করা জরুরি হয়ে গেছে। আগামী ২০ বছর মাটির টেলিস্কোপ আর আকাশের টেলিস্কোপের কাজই হলো এটাকে  খোঁজা। আমার কাছে মনে হয় এর বিষয়টির কাছেই আছে স্ট্রিং থিওরীর ভবিষ্যত।

ডার্ক ম্যাটার
এই ম্যাটার অন্যান্য ম্যাটার থেকে একটু আলাদা। যদিও এর ভর আছে  কিন্তু এই বস্তুটি আমাদের প্রতিদিনের বস্তুগুলার সাথে কোনো রকমের মিথস্ক্রিয়ায় যায় না আর আমাদের দেহের ভিতর দিয়ে সোজা পার হয়ে যেতে পারে। এটাকে ডার্ক ম্যাটার বলা হয় খালি এই কারনে যে এটা অদৃশ্য!

আমরা শুধু জানি এটার অস্তিত্ব আছে কারন এর ভর আছে, আর এটা গ্রাভিটেশনাল টান দেয়, মানে অভিকর্ষীয় টান মারতে পারে। এটা গ্যালাক্সি আর ক্লাস্টারগুলোর গঠনে সহায়তা করে। যদি এটা না থাকতো তাহলে গ্যালাক্সিও হতো না আমরাও ব্লগ লিখতে পারতাম না!

মহাবিশ্বে ডার্ক ম্যাটার পরিমান হিসাবে ৫ গুন বেশি আমাদের দৃশ্যমান বস্তুর চেয়ে। ডার্ক ম্যাটার যাই হোক না কেন, আমরা ত্বরণযন্ত্রে আর গবেষনাগারে যত কনিকা সনাক্ত করতে পেরেছি তার কোনোটা দিয়েই এটা তৈরী হয়নি। সাব-এটমিক লেভেলে সাধারণ ম্যাটারের সাথে খুব দুর্বল শক্তির মিথস্ক্রিয়ায থাকতে পারে যদিও এটা ধারনা মাত্র, পদার্থবিজ্ঞানীরা এখনও এই ম্যাটারের কণিকা ধরতে পারেননি।
তয় এলএইচসিতে এটা তৈরি হতে পারে এমন ক্যালকুলেশন বেশ কিছু জার্নালে পাওয়া যায়!

নিউট্রিনো
নিউট্রিনো নিরপেক্ষ, ছোটো এবং ভর এত কম যে এখনো মাপা সম্ভব হয়নি। এটা মহাবিশ্বে প্রচুর পরিমানে আছে। একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে একটি প্রোটনে এর পরিমান ৭০০ মিলিয়ন! যতবারই এটমিক নিউক্লিয়াস ভেঙ্গে যায় (নিউক্লিয়ার রিএক্টরে) অথবা একে অপরের সাথে যুক্ত হয় (সূর্যের পেটে) তখনই এর দেখা পাওয়া যায়। আপনি যখন একটা কলা খান ঐ কলার ভিতর যে পটাসিয়াম থাকে সেটাও নিউট্রিনো নির্গত করে। এটা না থাকলে সূর্য এত সুন্দর জ্বলতো না আর আমরা হাইড্রোজেনের চেয়ে বেশী ভরের এটম পেতাম না!

এই ভৌতিক কনিকা কারো সাতে কোনো মিথষ্ক্রিয়া করে না, যেমন সুর্য প্রত্যেক দিন ১০ ট্রিলিয়নের আলো যখন আমাদের উপর ফেলে তখন আমাদের কিছুই হয় না!

১৯৩০ সালের একটি তত্বে এটার অস্তিত্ব আর তার ২৬ বছর পর এটা গবেষনাগারে সনাক্ত হয় । সবাই সন্দেহ করে বিগ ব্যাং এর পর এতো এন্টিম্যাটারের গুম করার কাহিনীর পিছনে নিউট্রিনোর হাত আছে!

নিউট্রালিনোস
এটা হলো অনুমানধর্মী কণিকা যার মাধ্যমে ব্যাখ্যা দেওয়া যাবে ডার্ক ম্যাটার কি দিয়ে তৈরি। যাবতীয় বস্তুর ৮৩% হলো এই ডার্ক ম্যাটার। যদিও গ্যালাক্সি ক্লাস্টার সব এটমের ভিতর থেকে নিউক্লিয়াস দিয়েই তৈরী তবে বিজ্ঞানীরা সন্দেহ করেন নিউট্রালিনো দিয়ে ডার্ক ম্যাটার তৈরী!

যদিও খুব উচ্চশক্তির ত্বরণ যন্ত্রে এর সৃষ্টি করার সম্ভবনা আছে যেখানে খুব উচ্চশক্তির দুটি কণিকার মধ্যে সংঘর্ষ ঘটানো যাবে! সুপার সিমেট্রি অনুসারে নিউট্রালিয়ানো, W এবং Z বোসন এবং ফোটন আর হিগস বোসনের সাথে খুব কাছাকাছি সম্পর্কযুক্ত। তবে সবচেয়ে জরুরি দেখার বিষয় হলো অন্যান্য কনিকার সাথে এর মিথষ্ক্রিয়া কেমন!
যেহেতু এটা ইলেক্ট্রোউইক বা দুর্বল বল বহন করে সেহেতু এটা দিয়ে বোঝা যাবে বিগ ব্যাং এর পর কিভাবে এবং কি পরিমানে ডার্ক ম্যাটার তৈরী হয়েছে আর এটা এখন কিভাবে আছে।

⚫ উদাসী স্বপ্ন
তড়িৎ প্রকৌশলী ও বিজ্ঞান লেখক
[ফেসবুক প্রোফাইল]

মন্তব্য করুন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.