বিজ্ঞানীরা একটি যন্ত্রজীব (cyborg) স্টিংরে তৈরি করেছেন যা সৌরচালিত হৃদপেশীর সাহায্যে সাঁতার কেটে বেড়ায়। ভবিষৎকালীন চিকিৎসা সরঞ্জাম থেকে কৃত্রিম প্রানী সবকিছুতেই এই ধরনের প্রযুক্তির রয়েছে উজ্জ্বল সম্ভাবনা।
প্রযুক্তিগতভাবে “নরম রোবট” নামে পরিচিত এই সাইবর্গ স্টিংরে অত্যন্ত নমনীয় পলিমারে মোড়ানো সোনার তৈরি একটি কঙ্কাল দিয়ে তৈরি। পলিমারটি সত্যিকারে স্টিংরে’র চামড়ার মতো কাজ করে। এর অভ্যন্তরীন পেশী দুই লাখ জিন-প্রকৌশলের মাধ্যমে তৈরি আলোক-সংবেদী ইঁদুরের হৃদপেশী কোষ দিয়ে তৈরি। এই কোষগুলো ফটোভোল্টাইক কার্ডিওমায়োসাইটস নামে পরিচিত।
যখন এই স্তরীভুত কোষগুলো আলোর সান্নিধ্যে আসে তারা সামান্য সময়ের জন্য চার্জযুক্ত হয় এবং সংকুচিত হয়। এর ফলে পলিমারের চামড়াটি ভিতরের দিকে গমন করে। সোনার কঙ্গালটি এই সময় কিছুটা চার্জ ধরে রাখে এবং ক্ষণিক পরে পুনরায় চার্জ ছেড়ে দিলে চামড়া আগের অবস্থানে ফিরে যায়। এভাবে সংকোচন-প্রসারণের মাধ্যমে এরা সাঁতার কাটে।
যদিও এটি এখনো নিজে নিজে সাঁতার কাটতে পারে না, এটি এর প্রকৃতি অনুযায়ী আলোর প্রতি সাড়া দেয়। যখন কেউ এর গায়ে অপ্রতিসময় আলো নিক্ষেপ করে তখন এর মায়োসাইটগুলোর যে অংশে তীব্র আলো পড়ে সেই অংশ উজ্জীবিত হয় এবং এটি একটি নির্দিষ্ট দিকে সাঁতরে যেতে থাকে। আলোর কম্পাঙ্ক যত বেশী হয়, এবং তারফলে আলো যত শক্তিধারী হয় – সাইবর্গটি ততোই দ্রুত সাঁতার কাটে।
এই পরিবহন ব্যবস্থা কতটা নিখুঁত তা দেখার জন্য গবেষক দল একে একটি গোলকধাঁধার মতো পথে পরিচালনা করেন। এটি সেই পথ অনায়াসেই অতিক্রম করে। এই আন্তর্জাতিক গবেষনা দলটির নেতৃত্বে ছিলেন হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োপ্রকৌশন এবং ফলিত পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক কেভিন কিট পার্কার। তাঁরা এর আগেও একটি সাইবর্গ জেলিফিস তৈরি করেছিলেন এ ধরনের কার্ডিওমায়েসাইট ব্যবহার করে তবে সেই জেলীফিসটির চেয়ে এই স্টিংরেটির চলন আরো উন্নত। পার্কারের দলটি এখন আরো জটিল একটি জলচর প্রানী নির্মানের জন্য কাজ করছেন।