সারা বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস COVID-19 সংক্রমনের আশঙ্কায় ব্যপক অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। এই কারণে কল-কারখানা বন্ধ হয়েছে এবং ভ্রমন হ্রাস পেয়েছে। সারা বিশ্বে জ্বালানী তেলের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। ফলে প্রাণহানিকর দূষণ এবং জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণ গ্রীন হাউজের নির্গমন হ্রাস পেয়েছে।
অচলাবস্থার কারণে করোনাভাইরাসের হাত হতে যত মানুষ রক্ষা পাবে তারচেয়ে বেশী মানুষের প্রাণহানি ঠেকানো যেতে পারে বায়ুদূষণ হ্রাস পাওয়ার কারণে। এই ধারনা দিয়েছেন ফ্রান্সের The Hugo Observatory-র পরিচালক ফ্রাঙ্কোয়া জেমেন। এই প্রতিষ্ঠানটি পরিবেশগত পরিবর্তন, মানুষের স্থানান্তর এবং রাজনীতির পটপরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে কাজ করে।
বায়ুদূষণের ফলে প্রতিবছর ফ্রান্সের ৪৮ হাজার মানুষের মৃত্যুর পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে জেমেন বলেন, “অদ্ভুত শোনালেও, আমার মতে আপনি যদি বায়ুদূষণে মৃত্যুর সংখ্যার দিক দিয়ে বিবেচনা করেন তাহলে দিন শেষে বলা যেতে পারে করোনায় মৃত্যুর একটি ভালো দিক রয়েছে।” বিশেষজ্ঞদের প্রাক্কালিত হিসাব অনুযায়ী প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রের এক লাখ এবং চীনের দশলাখ মানুষ বায়ুদূষণের কারণে প্রাণ হারান।
বৈশ্বিক মহামারীতে কত মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে সেই সংখ্যা পুরোপুরি অনুমানধর্মী। সবচেয়ে স্থুল হিসাব অনুযায়ী একটি অনিয়ন্ত্রিত মহামারিতে কয়েকমিলিয়ন মানুষ প্রাণ হারাতে পারেন। তবে নির্ভরযোগ্য হিসাবে সংখ্যাটি আরো অনেক ছোট। কিছু বিশেষজ্ঞ বর্তমান পরিস্থিতিকে ১৯৫৭ সালের ফ্লু এর বিস্তারের সাথে তুলনা করেন যাতে ১০ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। একটি নিয়ন্ত্রিত মহামারিতে মৃত্যুর সংখ্যা নিশ্চিতভাবেই এর তুলনায় অনেক কম। তাছাড়া জেমেনের মতামত অনুযায়ী ভাইরাসের আতঙ্কের কারণে স্বাভাবিক জীবন-যাপণ ব্যহত হয়ে যতমানুষের প্রাণহানি ঘটবে ভাইরাসাক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ঘটবে তারচেয়ে কম সংখ্যক মানুষের। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘জলবায়ুর পরিবর্তন, বায়ুদূষণ কিংবা আরো নানাবিধ সমস্যা মানুষের মৃত্যুর জন্য করোনাভাইরাসের তুলনায় অনেক বড় হুমকী। তবু আমরা সেসব নিয়ে শঙ্কিত না হয়ে কেন করোনাভাইরাস নিয়ে পড়ে আছি?’ [Forbes অবলম্বনে]
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক