বিজ্ঞান পত্রিকা

ডারউইন দিবসের শুভেচ্ছাঃ যে গল্পের শেষ নেই

বিজ্ঞানের ইতিহাসে এমন এমন কিছু ঘটনা ঘটে যেগুলি প্রচলিত ধ্যান ধারণা কিংবা চিন্তাকে ভীষণ ভাবে আলোড়িত করে মানুষকে নতুন করে ভাবতে শেখায়। এই ঘটনাটির একটা গালভরা নাম আছে। এই বৈপ্লবিক ঘটনাগুলিকে বলা হয় “প্যারাডাইম শিফট”। এই মুহুর্তে সেরকম একটা প্যারাডাইম শিফট সম্বন্ধে তোমাদের বলতে বসেছি যার সূচনা হয়েছিল প্রাকৃতিক নির্বাচন মতবাদের মাধ্যমে।

প্রাকৃতিক নির্বাচন সম্বন্ধে বিস্তারিত জানবার আগে আমাদের জৈব বিবর্তন সম্পর্কে একটু জানা দরকার। তার আগে বলো তো বিবর্তন কি ? হ্যাঁ, বিবর্তন হচ্ছে পরিবর্তন বা বদলে যাওয়া। অনেক কিছুরই বিবর্তন হয়। যেমন ধরো ভাষার বা শব্দের বিবর্তন। একটা উদাহরণ দিই তাহলে আরেকটু সহজে বুঝতে পারবে, যেমন ধরো “অরেঞ্জ” মানে কি জানো তো ? ঠিক ধরেছ, ইংরেজিতে এই শব্দটির অর্থ হচ্ছে কমলালেবু। কিন্তু তোমাদের কি বিশ্বাস হয় সংস্কৃত “নবরঙ্গ” শব্দ থেকেই এই অরেঞ্জ শব্দটা এসেছে? বিশ্বাস না হওয়ার ই কথা। কিন্তু সংস্কৃতে কমলালেবু কে ডাকা হত “নবরঙ্গ” নামে। বার বার এত বড় শব্দ বলা যেহেতু বেশ কঠিন আর ঝক্কির। তাইএই নবরঙ্গ শব্দটিই পারস্যের বণিকদের মুখে মুখে হয়ে গেল “নরঙ্গ”। আরবের মানুষেরা কথায় কথায় এই নরঙ্গ কে ডাকা শুরু করল নরঞ্জ নামে। এবার যখন ইতালীয় কিংবা ফ্রেঞ্চ লোকজনের কাছে এই “নরঞ্জ” পৌঁছাল তখন তারা প্রথমের ন টাকে ফেলে দিল নিজেদের উচ্চারণের সুবিধের জন্য। এভাবে এক ভাষার নবরঙ্গ থেকে কমলালেবু বিবর্তনের মাধ্যমে হয়ে উঠল আরেক ভাষার অরেঞ্জ। ঠিক এভাবেই জীবজগতে চলে বিবর্তনের খেলা। বিভিন্ন প্রজাতির পরিবর্তনের মাধ্যমে বিকশিত হয়েছে বিবর্তনের ধারায় চলে আসা জীবজগত।অর্থাৎ বিবর্তন বলতে আমরা বুঝি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে জীবের গাঠনিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ক্রমপরির্তনকে। কিন্তু এই পরিবর্তনটা হয় কিভাবে ? কেউ কি এই পরিবর্তনের নকশা প্রণয়ন করে দেয় ? কিংবা কেউ কি ঠিক করে দেয় কোন জীবটি বিবর্তনের ধারায় জীবজগতের রঙ্গমঞ্চে টিকে থাকবে আবার কোনটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে ? বিজ্ঞানের ভাষায় এক কথায় এর উত্তর হচ্ছে “না”। তবে ? এই বিবর্তনের স্বরূপটা ঠিক কি রকম? এই স্বরূপ নিয়ে সর্বপ্রথম যে মানুষটি স্পষ্ট একটা ধারণা আমাদের দেন তার নাম চার্লস রবার্ট ডারউইন।

খুব সহজ করে যদি আমরা বলতে চাই তাহলে জীববিজ্ঞানে ডারউইনের মূল অবদান হচ্ছে দুটো যা “বিবর্তন” সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে আমাদের সবচে বেশি সাহায্য করেছে।ডারউইন ই সর্বপ্রথম পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণের মাধ্যমে প্রমাণ করে দেখান যে, জীবজগত স্থিতিশীল নয়- এই জীবজগতের পরিবর্তন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কোটি কোটি বছর এর বিবর্তনের মাধ্যমেই জীবের পরিবর্তন ঘটেছে ও ঘটে চলেছে আর এই নিরন্তর পরিবর্তনটি হচ্ছে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে। এই “প্রাকৃতিক নির্বাচন” আমাদের চারপাশে অহরহ ঘটে চলছে। যেমন তোমরা দেখেছ তো যে আম গাছে মুকুল ধরে হাজার-হাজার। কিন্তু সেই সব মুকুল থেকে কি আম হয় ? না। কেননা সেই মুকুলের অনেকাংশ ঝরে পড়ে যায় ঝড়-বৃষ্টির কারণে। আবার পোকার আক্রমণের কারণে মুকুলের পরিমাণ আরো কমে যায়। অবশিষ্ট যেসব মুকুল থেকে আম ধরে সেগুলোর একটা অংশ আবার ঝড়-বৃষ্টির কারণে বড় হবার আগেই ঝরে যায়, পোকার আক্রমণেও মরে যায় অনেকগুলো। এখন দেখো আম গাছে যে পরিমাণ মুকুল ধরে, সে তুলনায় গাছে আম হয় অত্যন্ত নগণ্য পরিমাণ। আবার এই নগণ্য পরিমাণ আমের বীজ থেকে নতুন আমের চারা হয় আরো অনেক কম পরিমাণ।অন্যদিকে দেখো মাছের পেটে যে পরিমাণ ডিম থাকে তার বেশিভাগই ডিম ছাড়ার পর শিকারী মাছের খাবারে পরিণত হয়, পর্যাপ্ত খাদ্যের অভাবে অনেক ডিম উর্বর হতে পারে না। এমন কী স্রোতেও প্রচুর ডিম নষ্ট হয়ে যায়।অবশিষ্ট যে পরিমাণ ডিম থেকেও মাছের পোনা হয় তারও একটা অংশ আবার বড় মাছের খাদ্যের শিকার হয়। এই সব প্রতিকূলতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মাছের যে পোনাগুলি শেষমেশ বেঁচে থাকে, তাদের মধ্যেও বড় হবার সঙ্গে সঙ্গে বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের সংগ্রহ করা কিংবা শত্রু মাছের নজর এড়িয়ে টিকে থাকার মত নানা ধরণের “জীবন সংগ্রাম” চলতে থাকে। তাহলে দেখো কোন জীব যদি অসংখ্য সন্তানের জন্ম দেয়ও শেষমেশ তাদের মধ্যে অল্প কয়েকটিই টিকে থাকে। অর্থাৎ কোন প্রজাতির প্রতিটি সদস্য যদি অনেকগুলি সন্তান করে জন্ম দেয়ও সার্বিকভাবে তাতে ওই প্রজাতিটির জীবসংখ্যার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটে না। কারণ জন্মলাভের পর প্রতিটি জীবকে খাদ্যের জন্য, বসবাসের জন্য, শত্রুর হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করবার জন্য কিংবা বংশরক্ষা করবার জন্য প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যেতে হয়। এই সংগ্রামে যে বিভিন্ন সুবিধা তৈরির মাধ্যমে টিকে থাকতে পারে ওই প্রাণীর তার নতুন বংশধরকেও রেখে যেতে পারে। ডারউইনের ভাষায় এটি ‘পরিবর্তনযুক্ত উত্তরাধিকার’ (Descent with Modification)। ডারউইন বলেছিলেন দীর্ঘসময় ধরে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে এভাবেই ‘পরিবর্তনযুক্ত উত্তরাধিকার’ থেকে সম্পূর্ণ নতুন প্রজাতির উদ্ভব হয়। নতুন প্রজাতির উৎপত্তি সহ জীবের বেঁচে থাকা, বিলুপ্তি কিংবা সংগ্রাম – এই পুরো প্রক্রিয়াটিকে সার্বিকভাবে বলা হয় প্রাকৃতিক নির্বাচন।

জীবজগতের বিবর্তন নিয়ে আমরা আজকে যা জানি তা মূলত গড়ে উঠেছে এই “প্রাকৃতিক নির্বাচন” এর প্রক্রিয়ার উপরে ভিত্তি করে যাকে আমরা বলি জৈববিবর্তন তত্ত্ব বা Evolution Theory. এখানে “Theory” কথাটা কিন্তু ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। হয়ত অনেকে মনে করেন যে তত্ত্ব বা থিওরি শুধু বইয়ের পাতাতেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু ব্যাপারটা সত্য নয়। আসলে আমরা হয়ত অনেক সময় মুখে মুখে এমন অনেক কথা বলি যেগুলির প্রচলিত অর্থ ছাড়াও বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ অর্থ রয়েছে। তাই থিওরি বা তত্ত্ব বলতে আমরা নিজেরা যা ই বুঝি না কেন বিজ্ঞানজগতে এর একটি আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। আমেরিকার জাতীয় বিজ্ঞান পরিষদের মতে, “বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হল প্রাকৃতিক কোনো একটি ঘটনা বা বাস্তবতার (phenomenon) প্রতিপাদিত ব্যাখ্যা। তত্ত্ব, বাস্তবতা কিংবা প্রকৃতিকে যৌক্তিকভাবে বর্ণনা করার একটি সমীকরণ ছাড়া কিছুই না।” আর তাই যার বাস্তব অস্তিত্ব নেই এমন কোনো কিছু নিয়ে বিজ্ঞানীরা কখনও তত্ত্ব প্রদান করেন না। কোন পর্যবেক্ষণ যখন বিভিন্ন ধাপে এবং বিভিন্ন রূপে প্রমাণিত হয় তখন তাকে বাস্তবতা বা সত্য (fact) বলে ধরে নেওয়া হয়। আর তত্ত্ব হচ্ছে সেই বাস্তবতাটি কিভাবে ঘটছে তার যৌক্তিক ব্যাখ্যা। প্রক্রিয়াটি বুঝতে পারলে কোন বাস্তবতা ব্যাখ্যা করবার জন্য কোন প্রস্তাবনা দেওয়া হলে তা কিভাবে ধীরে ধীরে একটি পূর্ণাংগ বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হয়ে ওঠে সেটি পরিষ্কার হতে পারে।

জীববিবর্তনের যে ধারা, এই ধারা শুরু হয়েছে প্রাণের উদ্ভবের শুরু থেকেই। এখানে একটি কথা বলে রাখা দরকার যে বিবর্তন তত্ত্ব কখনও প্রাণের উৎপত্তি কিভাবে হল সেটা নিয়ে মাথা ঘামায় না। অবশ্যই প্রাণের উৎপত্তি নিয়ে বিজ্ঞানের নানা শাখায় নানা ধরণের প্রকল্প , তত্ত্ব প্রচলিত রয়েছে কিন্তু প্রাণের উৎপত্তি বিবর্তন তত্ত্বের আলোচ্য বিষয় নয়। বিবর্তন তত্ত্ব আলোচনা করে প্রজাতির উদ্ভব কিরূপে হয়। প্রজাতির উদ্ভব আর বিবর্তনের এই ধারা এমন এক গল্পের যে গল্পের শেষ নেই। এই গল্প অন্তহীন ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে কালের পরিক্রমার সাথে সাথে। এই চলমান প্রক্রিয়ায় কোন প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে আবার কোন প্রজাতি টিকে রয়েছে অসীম সংগ্রামের ফলে।

বিবর্তনের পুরো প্রক্রিয়াটি চলে ভীষণ ধীর গতিতে। এত ধীরে এই প্রক্রিয়াটি চলে যে শাদা চোখে এই পরিবর্তন দেখাটা সম্ভব নয়। তবে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অণুজীবের বিবর্তন তুলনামূলক কম সময়ে হয় বলে মাইক্রো লেভেলে এই বিবর্তনটি কিভাবে হয় সে সম্বন্ধে সম্যক ধারণা পাওয়া যায়। বিজ্ঞানীরা প্রতিদিনই বিবর্তনের মূলনীতির উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক বের করছেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে , এন্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্ট ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কে। এই ব্যাকটেরিয়া গুলি নিজেদের পরিবেশে যেভাবে বিবর্তিত হয় তা বিবর্তন তত্ত্ব দ্বারা ব্যখ্যা করা যায়। এই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে ব্যাকটেরিয়ার বিবর্তনের কৌশল জেনে বিজ্ঞানীরা তা প্রতিরোধ করবার উপায় সম্বন্ধে গবেষণা করে যাচ্ছেন। এর পরে বলা যায় এইডস রোগের জন্য দায়ী এইচ আই ভি ভাইরাসের কথা। এই ভাইরাসের প্রতিষেধক বের করবার জন্য বিজ্ঞানীরা গত কয়েক দশক নিরন্তর গবেষণা করে যাচ্ছেন। কিন্তু এখনো তারা খুব একটা ফলপ্রসূ উপায় বের করতে পারেন নি। কেন ? আসলে এর পেছনে মূল কারণ হচ্ছে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে ঘটানো এই ভাইরাসের ভয়ানক বিবর্তনের খেলা। আমাদের শরীরে বংশগতির ধারক ও বাহক রূপে যেরকম ডিএনএ রয়েছে এই ভাইরাসগুলির দেহে কিন্তু তা নেই। রয়েছে প্রাচীন আরএনএ যার মাধ্যমে তারা পরবর্তী প্রজন্মে তাদের জিন ছড়িয়ে দিতে পারে। যেহেতু তাদের ডিএনএ নেই তাই স্বাধীন ভাবে বংশবৃদ্ধি করবার জন্য তারা মানুষের কোষকে ব্যবহার করতে শুরু করে। মানুষের কোষে থাকা কিছু প্রোটিনকে ব্যবহার করে এরা মানুষের শরীরে ঢুকে পড়ে। মানুষের কোষে থাকা অবস্থাতেই ভাইরাসটির অসংখ্য প্রতিলিপি বা কপি সৃষ্টি হয়। মানুষের শরীরে ভাইরাস যখন আস্তে আস্তে বিস্তার লাভ করতে থাকে তখন এই ভাইরাসগুলির গাঠনিক বৈশিষ্ট্যের আকস্মিক পরিবর্তন ঘটে থাকে। এই পরিবর্তনগুলি হয় আকস্মিক আর একেবারেই বিক্ষিপ্ত ও এলোমেলো ভাবে। এই ধরণের পরিবর্তনকে বলা হয় মিউটেশন। শুধু এই ভাইরাস নয় যেকোন জীবে ই মিউটেশন ঘটতে পারে। এই মিউটেশন ঘটার কারণ কিন্তু প্রাণীকে বাড়তি সুবিধে দেওয়া এরকম নয়। অনেক সময় মিউটেশন জীবকে বাড়তি সুবিধা দেয় আবার অনেক সময় উদ্দেশ্যবিহীন ভাবেও ঘটে। যাই হোক, রিভার্স ট্রান্সক্রিপ্টেজ নামের একটি এনজাইম রয়েছে যেটি এই ভাইরাসের দেহে থাকে। মানুষের শরীরে এই এনজাইমটি থাকে না। এই এনজাইমটিকে কাজে লাগিয়ে ভাইরাস অসংখ্য ধরণের মিউটেশন ঘটাতে পারে।যার ফলে পরবর্তী প্রজন্মের ভাইরাস গুলি অনবরতভাবে নতুন নতুন ধরণের বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন একই ভাইরাসের বিভিন্ন প্রকরণ তৈরি করতে পারে। তাহলে ব্যাপারটা খানিকটা এরকম আমরা যে শত্রুকে ধরাশায়ী করতে চাই সেই শত্রুর প্রকৃত রূপ ই আমরা ঠিকমত বুঝতে পারছি না। বিবর্তনের মাধ্যমে নিজেকে সে নানাভাবে পরিবর্তিত করে ফেলছে আর রক্তবীজের বংশধরের মত ছড়িয়ে পড়ছে। এই বিবর্তনগুলি ঘটছে আমাদের চোখের সামনে অতি দ্রুত মানুষের শরীরের ভিতর। যার ফল দাঁড়াচ্ছে এরকম যে, প্রত্যেক এইডস রোগীর পরিস্থিতি এবং তার দেহের ভিতরে থাকা এইচআইভি ভাইরাসের বিবর্তনের ধারা বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীদের ওষুধ বানাতে হবে যেটা ভীষণ কষ্টসাধ্য একটি ব্যাপার। তাই এই ভাইরাসের বিবর্তনের প্রকৃত স্বরূপ উদঘাটনের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা কার্যকরী প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

বিবর্তন তত্ত্ব ব্যবহার করে অভয়ারণ্য নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ইদানীং গবেষকগণ ইভো ডেভো টেকনিক ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের জীবের বিবর্তন প্রক্রিয়া কিরূপে হবে তা বুঝতে করতে পারেন। এরকম একেকটি প্রায়োগিক ক্ষেত্রই হচ্ছে বিবর্তন তত্ত্বকে কষ্টি পাথর দিয়ে যাচাই করে নেওয়ার মত একেকটা পরীক্ষা। এই প্রত্যেকটি পরীক্ষাতেই বিবর্তন তত্ত্ব সফলভাবে পাশ করে গেছে। আর তাই আজকের দিনে দাঁড়িয়ে বিবর্তন তত্ত্ব একটি শক্তিশালী এবং কার্যকরী তত্ত্ব হিসাবে বিজ্ঞানীদের কাছে পরিগণিত হচ্ছে। ভূতত্ত্ববিদ্যা, খণিজজীববিদ্যা, অণুজীববিজ্ঞান, জীনতত্ত্ব, প্রাণরসায়ন,অণুপ্রাণবিজ্ঞান, বাস্তুসংস্থানসহ জীববিজ্ঞানের এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে বিবর্তন তত্ত্বকে উপেক্ষা করে কোন গবেষণা করা হয়। বিজ্ঞানী থিওডসিয়াস ডবঝনস্কি তো বলেইছিলেন, “জীববিজ্ঞানকে বিবর্তনবাদের আলোকে না দেখলে কোনো কিছুই আর কোনো অর্থ বহন করে না।” তাই যদি জীবনকে বুঝতে হয়, জানতে ইচ্ছে হয় প্রাণের-প্রকৃতির এই খেলা তাহলে বিবর্তনের গল্প সম্বন্ধে আমাদের জানতে হবে। সেই গল্প, যে গল্পের শেষ নেই।

-অতনু চক্রবর্তী
শিক্ষার্থী, বুসান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বুসান।

Exit mobile version