সেদিন হয়তো খুব বেশি দূরে নয় মানুষ মঙ্গলের মাটিতে বিচরণ করবে। যদিও আমরা আমাদের সাথে বিভিন্ন অত্যাবশ্যকীয় পন্য বহন করে নিতে পারব কিন্তু দীর্ঘদিনের ভ্রমনের জন্য আমাদের নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য মঙ্গলের মাটিতেই চাষ করা বাঞ্ছনীয় হবে। যদিও The Martian ছবিতে আমরা অনায়াসে মঙ্গলের বুকে চাষ করতে দেখেছি, তবে বাস্তবতা হচ্ছে এই বিষয়ে খুব কমই গবেষণা হয়েছে।
সৌভাগ্যবশতঃ সম্প্রতি কিছু ডাচ বিজ্ঞানী ঘোষনা করেছেন মঙ্গলের মতো একই ধরণের মাটিতে জন্মানো চারধরনের সবজি এবং শস্য খাওয়ার জন্য সম্পূর্ন নিরাপদ। মূলা, মটরশুটি, রাই এবং টম্যাটো এইগুলো চাষের ক্ষেত্রে বিপদজনক মাত্রার ভারী ধাতু যেমন: লেড, কপার বা ক্যাডমিয়াম এসবের উপস্থিতি সনাক্ত হয় নি। এধরনের ভারী ধাতুগুলো মানব স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
এই গবেষণার একজন জেষ্ঠ্য গবেষক ও বাস্তুবিদ ওয়েইজার ওয়ামেলিক বলেন, “এই অবিস্মরনীয় ফলাফল খুবই আশাব্যাঞ্জক। তবে মঙ্গলের মাটিতে উৎপাদিত খাদ্য নিরাপাদ হবে তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য যতবেশী সম্ভব শস্যকে খাদ্যের উৎস হিসেবে ব্যবহারের যোগ্যতা যাচাইয়ে এই ধরনের গবেষনা করে দেখা প্রয়োজন।”
২০১৩ সাল থেকে এই বিশ্ববিদ্যলয়ে মঙ্গলের মতো এই ধরণের কৃত্রিম মাটিতে দশটি ভিন্ন ভিন্ন শস্য উৎপাদনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে তবে এখনো এগুলোর কোনো কোনোটি খাবার হিসেবে অনিরাপদ হতে পারে। এই অন্যান্য শস্যগুলোকে আরো বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষার আওতায় আনা হচ্ছে। এই শস্যগুলোর মধ্যে রয়েছে আলু, রোকুলা (rocula) এবং ওয়াটার ক্রেস (water cress)। এগুলোতে ভারী ধাতু সঞ্চিত হয় না এই ব্যাপারটি আরো নিশ্চিত করা হবে।
মঙ্গলের বুকে কৃষিকাজ আদৌ সম্ভব কিনা এই ধরনের গবেষনা এই প্রশ্নের উত্তরের কেবল একটি ক্ষুদ্র অংশ। ভুতত্ত্ব প্রকৌশলীদের শুরুতে মঙ্গলে একটি দীর্ঘমেয়াদি বৈশ্বিক উষ্ণায়ন শুরু করতে হবে যাতে বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা সহনীয় হয় এবং মেরুর বরফ গলতে শুরু করে। হয়তোবা এতে কিছু এলাকায় বন্যা হয়ে স্বাদু এবং লবনাক্ত পানির প্লাবন তৈরি হতে পারে।
তবে এমনটি ক্ষুদ্র মেয়াদেও শস্যগুলোকে সবল রাখতে চাষের এলাকায় প্রচুর পানির প্রয়োজন হবে। ক্ষুদ্র আকারে এধারনের পানি উৎপাদনের জন্য অনেক পদ্ধতি রয়েছে। তবে খুব সম্ভবতঃ প্রথম মঙ্গলে মানুষ্যবাহী অভিযানটিতে প্রয়োজনীয় পানি বহন করে নিয়ে যাওয়া হবে।