বিজ্ঞান পত্রিকা

আইনস্টাইনের জীবনের তিনটি মজার ঘটনা

আলবার্ট আইনস্টাইনের কর্ম ও জীবন নিয়ে চমৎকার একটি সুইডিশ বই Albert Einstein : det modiga geniet লেখক Bengt Fredrikson । বইটি সহজ সুইডিশ ভাষায় লেখা হয়েছে। বইটি থেকে আইনস্টাইনের জীবনের তিনটি ঘটনা এখানে তুলে ধরলাম। ভবিষ্যতে বইটি অনুবাদ করার ইচ্ছা আছে।

এক. প্রথমবার আইনস্টাইন যখন আমেরিকায় যান, তখন চার্লি চ্যাপলিনের সাথে তাঁর বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। এক বার আইনস্টাইন ও চ্যাপলিন একসাথে হেঁটে আসছে দেখে হাজার হাজার লোক হর্ষধ্বনি করছে। তা দেখে চ্যাপলিন আইনস্টাইনকে মজা করে বলছেন; “ওরা আমাকে দেখে হর্ষধ্বনি করছে কারণ ওরা আমার কাজ বোঝে আর তোমাকে দেখে করছে কারণ ওদের কেউই তোমার কাজ বোঝে না।”

শুধু সাধারণ মানুষ নয় তৎকালীন অনেক বিজ্ঞানীর কাছেও আইনস্টাইনের “থিওরি অফ রিলেটিভিটি” বোঝা খুব সহজ ছিল না। বলে রাখা ভাল, নোবেল পুরষ্কার পাওয়ার পর আইনস্টাইন যখন সুইডেনের গোথেনবার্গে বক্তৃতা দিলেন তখন পত্রিকায় এক বিজ্ঞানগবেষক বললেন; এখানে দুই একজন বাদে অন্যকেউ আসলে বোঝেননি আইনস্টাইনের “থিওরি অফ রিলেটিভিটি” । তবে এটা বুঝতে পারছি তিনি নতুন এক বিষয়ের দরজা খুলছেন মাত্র। আইনস্টাইন প্রথমবার আমেরিকায় যাওয়ার পর তার বন্ধুকে এক চিটিতে আক্ষেপ করে লিখছে; “থিওরি অফ রিলেটিভিটি” নিয়ে আমি ১৫ বছর কাজ করেছি, অথচ মানুষ তা ১৫ সেকেন্ডে আমার থেকে বুঝতে চায়। প্রতিদিন সবাই আমাকে দেখতে আসে, মনে হয় আমি চিড়িয়াখানার কোন জিরাফ। “থিওরি অফ রিলেটিভিটি” জন্যে আইনস্টাইন নোবেল পান নি, আবার এই কাজের জন্যে তিনি পৃথিবীতে বিখ্যাত হয়েছেন। মানুষের অহেতুক প্রশ্নের যন্ত্রণায় তিনি শেষ পর্যন্ত মানুষকে “থিওরি অফ রিলেটিভিটি” বোঝাতে বলেছেন: তুমি যদি কোন মেয়ের সাথে এক ঘণ্টা বসে থাক তাহলে তোমার মনে হয় তুমি তার সাথে এক মিনিট ছিলে, অন্যদিকে চুলার উপর এক মিনিট বসে থাকলে মনে হয় এক ঘণ্টা বসে আছ।আমাদের কাছেও “থিওরি অফ রিলেটিভিটি” নারী আর চুলাতে গিয়েই ঠেকেছে।

দুই. আইনস্টাইন বুঝতে পারলেন-হিটলারের আমলে জার্মানিতে থাকা আর নিরাপদ নয়। তাই তিনি আমেরিকায় পাড়ি জমালেন। আমেরিকায় তিনি ভার্সিটিতে পড়াবেন এটাই স্বাভাবিক। তবে ইউরোপে অধ্যাপকের মাইনে আর আমেরিকার অধ্যাপকের মাইনেতে যে এতো বিশাল ব্যবধান তা আইনস্টাইন জানতেন না। তো, আমেরিকার প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির প্রধান আলবার্ট আইনস্টাইনকে বেতন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করায় আইনস্টাইন জার্মানির বেতনের সাথে হিসেব করে বছরে ৩ হাজার ডলার দাবী করলেন। টাকার অংক শুনে ভার্সিটির প্রধান চুপ হয়ে গেলেন। অন্যদিকে আইনস্টাইন ভাবছেন তিনি হয়তো প্রধানের কাছে কিছুটা বেশি বেতন চেয়ে বসলেন। অবশেষে ১৫ হাজার ডলারে আইস্টাইনের বেতন নির্ধারণ হলো।

তিন. তরুণ বয়সে ভার্সিটি পড়া অবস্থায় আলবার্ট আইনস্টাইন হতাশায় পড়ে একবার পিতাকে চিঠিতে লিখেছিলেন যে, “আমার জন্ম না হওয়াই হয়তো ভাল ছিল।” বিখ্যাত হওয়ার পর আইনস্টাইন নিজেকে কখনো খুব জিনিয়াস বলেন নি, তবে অন্যদের থেকে বেশি কল্পনা করার শক্তি তা আছে তা নিজে স্বীকার করতেন।

গতকাল ছিলো তাঁর জন্মদিন। শুভ জন্মদিন শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ জিনিয়াস আলবার্ট আইনস্টাইন।

-সুব্রত শুভ

বিজ্ঞান পত্রিকা প্রকাশিত ভিডিওগুলো দেখতে পাবেন ইউটিউবে। লিংক:
১. টেলিভিশনঃ তখন ও এখন
২. স্পেস এক্সের মঙ্গলে মানব বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা
3. মাইক্রোস্কোপের নিচের দুনিয়া

Exit mobile version