গবেষকগণ একটি অনন্যসাধারণ আবিষ্কার করেছেন। তাঁরা দেখেছেন, পৃথিবীর বহিঃস্থ বায়ুমন্ডল ধারনার চেয়ে অনেক বেশী, ৬৩০,০০০ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত যা পৃথিবীর ব্যসের পঞ্চাশগুণ। তবে পৃথিবী পৃষ্ঠ হতে যত দূরে যাওয়া যাবে ততই এর ঘনত্ব কমতে থাকবে। এই আবিষ্কার মহাশূন্য গবেষণা এবং মহাশূন্য ভ্রমনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারে।
ইউরোপীয় স্পেশ এজেন্সি (ESA) এবং নাসা পরিচালিত সোলার এন্ড হেলিওস্ফেরিক অবজারভেটরি (SOHO) -র কয়েক দশকের পর্যবেক্ষণলব্ধ তথ্য হতে বায়ুমন্ডলের এই বিস্তৃতি আবিষ্কৃত হয়েছে। এই পর্যবেক্ষণসমূহ অবশ্য কয়েক দশক পুরোনো এবং বছর বিশেষ বিশেষ সময়েই এই তথ্যগুলো সংগ্রহ করা যায়।
গবেষণার নেতৃস্থানীয় এবং রাশান স্পেস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক ইগোর বালিউকিন এক বিবৃতিতে বলেন, “আমাদের চাঁদ পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের ভেতর দিয়েই উড়ছে। দুই দশক আগের SOHO মহাশূন্যযানের তথ্য ঘেঁটে দেখার আগে আমরা সেটা বুঝতে পারিনি।”
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী চাঁদের নিকটবর্তী পৃথিবীর বহির্মন্ডল (এক্সোস্ফিয়ার) আন্তগ্রহ শূন্যস্থান হতে কিছুতা ঘন। এখানে প্রতি ঘনসেন্টিমিটারে কেবল ০.২ টি করে পরমানু রয়েছে। পৃথিবী হতে ৬০ হাজার কিলোমিটার দূরেও প্রতি ঘনসেন্টিমিটারে ৭০ টি করে হাইড্রোজেন পরমানু পাওয়া যায়। এর চারগুণ দূরত্বে এই ঘনত্ব কমে গিয়ে প্রতি ঘনসেন্টিমিটারে একটি পরমানুর নিচে নেমে যায়। ঘনত্ব খুব কম হলেও এই হাইড্রোজেন পরমানুগুলো সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির সাথে ক্রিয়া করে জিওকরোনা (geocorona) উৎপন্ন করে। ১৯৭২ সালে চন্দ্রগামী নভোচারীগণ তাঁদের অজান্তে প্রথম এই জিওকরোনার ছবি তোলেন।
অতিবেগুণী রশ্মির এই আভা যদিও ভবিষ্যৎ নভোচারীদের চন্দ্রাভিযানের ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকি তৈরি করবে না তবে চন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণকেন্দ্র ইত্যাদি স্থাপনের ক্ষেত্রে বিষয়টি আমলে নিতে হবে। এই আবিষ্কার সৌরজগৎ বহির্ভূত গ্রহসমূহ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল রাখবে। কোনো গ্রহের বহির্মন্ডলে হাইড্রোজেন সৃষ্ট অতিবেগুনী আভা গ্রহের পৃষ্ঠের নিকটে জলীয়বাস্পের উপস্থিতির নির্দেশ দেয়। শুক্র, পৃথিবী এবং মঙ্গলের ক্ষেত্রে তেমনটিই দেখা গেছে। সৌরজগতের বাইরের অন্যকোনো নক্ষত্র ব্যবস্থায় এমন আভা আবিষ্কৃত হলে সেখানকার গ্রহে পানির উপস্থিতির নির্দেশনা পাওয়া যেতে পারে। [IFLScience অবলম্বনে]
বিজ্ঞান পত্রিকা প্রকাশিত ভিডিওগুলো দেখতে পাবেন ইউটিউবে। লিংক:
১. টেলিভিশনঃ তখন ও এখন
২. স্পেস এক্সের মঙ্গলে মানব বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা