বিজ্ঞান পত্রিকা

পৃথিবীতে মঙ্গলের পাথর নিয়ে আসার পরিকল্পনা মহাকাশ সংস্থার

ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) এবং নাসা মঙ্গলগ্রহে একটি মিশনে যাওয়া এবং মাটির নমুনা সংগ্রহ ক’রে পৃথিবীতে ফেরত পাঠানোর জন্যে একটি যৌথ অভিপ্রায় প্রকাশ করেছে। এই প্রক্রিয়ায় মঙ্গলের মাটির বিশ্লেষণ ল্যান্ডার বা রোভারের করা বিশ্লেষণের চেয়ে আরও অনেক বেশি পরিশীলিত হবে। নমুনাগুলি নিখুঁতভাবে আদি অবস্থায় সংরক্ষণ করে রাখা হবে যাতে করে প্রাপ্ত ফলাফলগুলি স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায় এবং প্রযুক্তি উন্নত হলে নতুন করে আরো উন্নত ধারণা পাওয়ার জন্যে পরীক্ষা করা যায়।

এই কাজটি এত সহজ হবে না, কিন্তু শুধুমাত্র তিনটি মিশন দিয়ে এটি করা সম্ভব। একটি রোভার নমুনা সংগ্রহ ক’রে সংরক্ষণ করবে। আরেকটি সংগৃহীত নমুনা একটি ল্যান্ডারে নিয়ে যাবে এবং একটি মঙ্গল অভিমুখী যানে রাখবে। এবং পরিশেষে একটি তৃতীয় মিশন কক্ষপথে নমুনাটি সংগ্রহ করবে এবং পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনবে।

২০১৬ সনের মঙ্গল গ্রহ

পরের দশকের শুরুতে এই ধরনের মিশনে অংশগ্রহন উপযোগী দু’টি রোভার মঙ্গলগ্রহে থাকবে। নাসা’র “মঙ্গল ২০২০ রোভার” ছোট পাত্রে নমুনা সংগ্রহ করবে এবং একই সময়ে ইএসএ’র “এক্সোমার্স রোভার” প্রানের অনুসন্ধানে মঙ্গল পৃষ্ঠে ২ মিটার (৬.৬ ফুট) পর্যন্ত গর্ত খুঁড়বে। তারপর নমুনাগুলো একটি ছোট রকেটে করে মঙ্গলের কক্ষপথে পাঠানো হবে এবং পৃথিবীতে ফিরে আনা হবে।

ইএসএ’র “মানব এবং রোবোট কর্তৃক অনুসন্ধান” এর পরিচালক ডেভিড পার্কার এক বিবৃতিতে বলেন, “যেকোন গ্রহ বিজ্ঞানীর কাছে এই লাল গ্রহের বাছাই করা আদি মাটির নমুনা সংগ্রহ করে, পৃথিবীতে ফিরিয়ে নিয়ে এসে, সর্বাধুনিক সুযোগ সুবিধার সাহায্যে পরীক্ষা করা প্রশ্নাতীতভাবে লোভনীয়। এই মিশনের দ্বারা মঙ্গলের ইতিহাস পুনর্গঠন এবং এর অতীতের প্রশ্নগুলির উত্তর দেয়ার ক্ষেত্র দু’টি নাটকীয়ভাবে উন্নত হবে”।

ইএসএ এবং নাসা হয়তো এরই মধ্যে এই প্রকল্পের উপর কাজ শুরু করে থাকতে পারে, কিন্তু তারা এখনো কোন বিশেষ অংশীদারিত্ব গঠন করেনি। উভয় সংস্থা বর্তমানে অন্যান্য মহাকাশ সংস্থা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন এবং সহযোগিতা করার পরিকল্পনা করছে।

পার্কার আরো বলেন, “মঙ্গলে অভিযান এবং প্রত্যাবর্তনের সমস্যা গুলির মোকাবিলা করার জন্যে আমাদের সবচেয়ে সেরা আন্তর্জাতিক এবং বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের কথা বিবেচনা করতে হবে। ইএসএ-তে আমাদের এরই মধ্যে ২২ টি সদস্য রাষ্ট্র এবং আরও অনেক সহযোগী অংশীদার রয়েছে। বলা যেতে পারে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব আমাদের মূল বৈশিষ্ঠ্য।

যদিও এই অভিযান কবে নাগাদ শুরু হবে তা এখনো নির্ধারিত হয়নি, তবে খুব শীঘ্রই পৃথিবীতে মঙ্গল গ্রহের মাটি নিয়ে আসার প্রকল্প শুরু হতে যাচ্ছে।

-পুলক বড়ুয়া

Exit mobile version