যদি পানিতে ভাইরাস থেকে থাকে, মাটিতে ভাইরাস থেকে থাকে তাহলে আকাশে ভাইরাস থাকতে এমনটি আশা করাই যেতে পারে। এবং বিজ্ঞানীরাও ঠিক এমনটিই আঁচ করেছেন। তাঁরা দেখতে পেয়েছেন বায়ুমন্ডলের একবারে নিচের স্তরের উপরে প্রতিদিন শতশত মিলিয়ন ভাইরাস এসে জড়ো হচ্ছে।
এই ঘটনা থেকে একটি কৌতুহলোদ্দীপক বিষয়ের উত্তর পাওয়া যায়। কোন একজায়গায় ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হলে কেমন করে তা অতিদ্রুত বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে এই ঘটনার মাধ্যমে তার ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।
যাবতীয় জীবাণুর মধ্যে ভাইরাসই পরিমাণের দিক দিয়ে সবচেয়ে বিস্তৃত। কেবলমাত্র সমুদ্রের পানিতেই এদের পরিমান ১০^৩০ (একের পর ত্রিশটি শূন্য)। সেই সাথে আমরা এও জানি ভাইরাস বাতাসে ভেসে বেড়াতে পারে- যা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়ার জন্য অন্যতম মাধ্যম।
ইতিপূর্বে জানা গিয়েছিলো বৃষ্টিপাতের মাধ্যমে প্রতি বর্গমিটার ভুমিতে প্রতিবছর প্রায় এক ট্রিলিয়ন ভাইরাস এসে পৌঁছায়। ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ভাইরাস বিশেষজ্ঞ কার্টিস সাটল বলেন, “প্রতিদিন প্রতি বর্গমিটারে ৮০০ মিলিয়নের বেশি ভাইরাস বায়ুমন্ডলীয় নিচের স্তরে যুক্ত হয়। কানাডার প্রতিটি নাগরিকের বিপরীতে এই সংখ্যাটি দাঁড়াচ্ছে ২৫।” কার্টিস সটল সাপ্রতিক এই গবেষণাটির অন্যতম গবেষক যার মাধ্যমে বায়ুমন্ডলের সর্বনিন্মস্তরের ভাইরাস জড়ো হওয়ার বিষয়টি জানা যায়। তিনি বলেন, “প্রায় ২০ বছর আগে হতে আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে জিনগতভাবে সদৃশ ভাইরাস সনাক্ত করছিলাম। বাতাসের মাধ্যমে বায়ুমন্ডলের স্তরে জড়ো হওয়ার মাধ্যমেই একমহাদেশে উদ্ভব কোনো ভাইরাসের অন্য মহাদেশে আবির্ভাবের ব্যাখ্যা পাওয়া যায়।”
বায়ুর মাধ্যমে ভাইরাসের এভাবে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়াকে এ্যারোসোলাইজেশন বলে। এটি ঠিক কীভাবে ঘটে তা অনুধাবণ করতে না পারলেও গবেষকগণ ধারনা করছেন তারা বায়ুমন্ডলে গমন করে ধূলিকণার সাথে কিংবা সামুদ্রিক পানিকণার সাথে যুক্ত হয় এবং এভাবেই দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়ে। ব্যাকটেরিয়া এভাবে ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা গিয়েছে তাই ভাইরাসের পক্ষেও এভাবে ছড়িয়ে পড়ার যথেষ্ট সুযোগ করেছে। [sciencealert অবলম্বনে]