বিজ্ঞান পত্রিকা

দ্রুত বিলুপ্তির দিকে এগোচ্ছে এশীয় চিতা

আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এশীয় চিতা অতি দ্রুত বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাবে। সংরক্ষণবাদীরা সম্প্রতি এমন একটি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

বন্য অবস্থায় এশীয় চিতার মাত্র চল্লিশটি প্রানী রয়েছে, যার সবকয়টি রয়েছে ইরানে এবং এরা দ্রুতই বিলুপ্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। চমৎকার এই প্রানীদের সংখ্যা বেশ কয়েক বছর ধরেই কমে আসছে। তবে এর বিলুপ্তি নিয়ে সম্প্রতি উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে কেননা জাতিসংঘের বন্যপ্রানী সংরক্ষনের বরাদ্দে কাট-ছাট হয়েছে আর ইরানের উপর আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবরোধ চলছে। ফলে এশীয় চিতার কফিনের শেষ পেরেকটি ঠোকা শুরু হয়ে গেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।

ইরানি বন্যপ্রানী সংরক্ষণবাদী, জামশিদ পার্চিজাদেহ সংবাদমাধ্যমের সাথে আলাপচারিতায় বলেন, “অর্থবরাদ্দে সংকটের অর্থই হলো এশীয় চিতার বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া। ইরান ইতিমধ্যেই এশীয় সিংহ এবং কাস্পিয়ান বাঘ হারিয়ে ভুগছে। এখন আমরা এশীয় চিতার বিলুপ্তিও পর্যবেক্ষণ করতে যাচ্ছি।”

প্রায় ৩২ হাজার বছর হতে ৬৭ হাজার বছর পূর্বে এশীয় চিতা  (Acinonyx jubatus venaticus) কিংবা ইরানি চিতা আফ্রিকার চিতা হতে পৃথক হয়ে যায়। যদিও এদের একসময় সমগ্র আরবীয় অঞ্চল, পূর্বে ভারত, এমনি পাকিস্তানেও পাওয়া যেত এখন কেবল সামান্য কিছু চিতা ইরানে বিচরণ করে। উভয় চিতা একই ধরনের প্রানী, বিশেষত, গতির বিচারে এরা কাছাকাছি, তবে ইরানি চিতা আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট এবং বিবর্ণ।

বিশবছর ধরে IUCN এর লাল তালিকায় এই উপপ্রজাতির প্রাণীটি “সংকটপূর্ণ বিপদাপন্ন” হিসেবে তালিকাভুক্ত রয়েছে। এদের মৃত্যুর কারণ অন্য সব ক্ষেত্রের মতোই, অতিশিকার, বাসস্থান ধ্বংস এবং খাদ্যাভাব। ১৯৭৯ সালের ইরানের বিপ্লব এবং অতপর ইরাক-ইরান যুদ্ধ ইত্যাদির ডামাডোলে এদের প্রতি কখনোই মনোযোগ দেওয়া হয় নি এবং সংরক্ষণের উদ্যোগে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে খুবই কম।

গত মাসে ইরানি চিতা সমিতির প্রকাশিত বিবৃতি প্রকাশের পরপরই নীতিনির্ধারকদের প্রতি এশীয় চিতার সংকটকালীন পরিস্থিতির প্রতি মনোযোগ আকৃষ্ট করা হয়। ২০১৪ সালে ইরানের জাতীয় ফুটবল দল এশীয় চিতার ছবি তাদের জার্সিতে যুক্ত করে এদের প্রতি মনোযোগ আকর্ষনের চেষ্টা করে। তার পরের বছর মেরাজ এয়ারলাইন্স তাদের বিমানের নাকে চিতার ছবি যুক্ত করে একই ধরনের প্রচারণা চালায়। [iflscience অবলম্বনে]

-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক

Exit mobile version