বিশ্বে যত রকম পাজলের খেলা আছে ট্যানগ্রাম তার মধ্যে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ট্যানগ্রাম হল সাতটুকরো বিশেষ আকৃতির পাজল। এই টুকরোগুলোর প্রতিটিকে ট্যান বলা হয়। এই সাতটি ট্যানের বিভিন্ন রকম সমন্বয়ের মাধ্যমে পাশাপাশি রেখে হাজার হাজার বিভিন্ন আকার দেয়া যায়। এই সাতটি টুকরো নিচের ছবির মত।
এই ছবিটির অনুপাতে টুকরোগুলোকে তৈরি করে নিতে হবে। এই ট্যানগুলোকে যদি সাধারণ জ্যামিতিক আকার দেওয়া হয় তাহলে নিচের shape গুলো পাওয়া যাবে।
অতি প্রাচীন কাল থেকে চীনে ট্যানগ্রাম খেলা প্রচলিত ছিল। ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ট্যানগ্রাম আমেরিকায় প্রসার লাভ করে এবং জনপ্রিয় হয়। কিছুদিনের মধ্যে খেলাটি ইংল্যান্ডে পৌঁছে যায় এবং সেখানে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। এই ফলশ্রূতিতে অল্পসময়ের মধ্যে সারা ইউরোপে খেলাটি পৌঁছে যায়। ইতিমধ্যে ট্যানগ্রাম বিষয়ক বেশ কিছু বই প্রকাশিত হয়। এই বইগুলোতে ট্যানগ্রামের শয়ে শয়ে নকশা দেখানো হয়।
যদিও উপরের ছবিতে প্রতিটি জ্যামিতিক চিত্রে ট্যানগুলোকে আলাদাভাবে দেখানো হয়েছে, ট্যানগ্রাম প্রতিযোগীতায় এরকম আলাদাভাবে প্রত্যেকটি ট্যানকে দেখানো হয় না।এই নকশাগুলোকে এককভাবে silhouette করে রাখা হয় যেন ট্যানগুলোকে আলাদাভাবে বোঝা না যায়।যেমন উপরের জ্যামিতিক আকৃতিগুলোতেই যদি ট্যানগুলোকে আলাদাভাবে না দেখানো হয় তাহলে সঠিক টুকরোটি সঠিক জায়গায় বসানো বেশ কষ্টকর হয়ে পড়ে।
এবার ট্যানগ্রাম দিয়ে নকশা করা কিছু চিত্র দেখা যাক। তাহলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। যেমন ধরুন: নিচে একটি পাখির বিভিন্ন ভঙ্গিমার ছবি।
সেই নির্দিষ্ট সাতটি টুকরো দিয়ে সবগুলো পাখির নকশা করা হয়েছে। এবারে কয়েকটি মানুষের নকশা:
পাখির ছবিগুলোতে যদিও প্রতিটি ট্যানের shape আলাদা বোঝা যাচ্ছে, কিন্তু মানুষের এই ছবিগুলোতে shape গুলো আলাদাভাবে আর পাওয়া যায় না। ছবি দেখে নকশাগুলো তৈরি করাটাই হল খেলা। আরো কিছু ছবি দেখুন এবং প্র্যাকটিস করুন। মানুষের shape বানানো যতটা সহজ, এই shapeগুলো বানানো ততটা সহজ হবে না।
আপনার ট্যানগ্রাম সেটটি আপনি নিজেই তৈরি করে নিতে পারবেন। একটি বর্গাকৃতির শক্ত কাগজ মাপ অনুযায়ী কেটে নিলেই ট্যানগুলো পেয়ে যাবেন। উপরে যদিও বর্গাকৃতির ট্যান অংশগুলো একবার দেখানো হয়েছে। এখানো আরো পরিষ্কার ভাবে দেখানো হল:
আশা করি কাগজটিকে উপরের ছবির মত সহজেই কেটে ট্যানগুলো তৈরি করে ফেলতে পারবেন। এছাড়া অনলাইনে search দিয়ে প্রচুর নকশা নামিয়ে নিয়ে চর্চা করতে পারবেন। অনলাইনে ট্যানগ্রামের গেম খেলতে পারবেন এই লিংকে গিয়ে।
⚫ বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক