বিজ্ঞান পত্রিকা

অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিদিন ১০ লাখ পাখি মারা যায় বিড়ালের কারণে

প্রতিদিন অস্ট্রেলিয়ায় ১০ লাখের বেশি পাখি মেরে ফেলছে বিড়াল। সম্প্রতি পাখিমৃত্যুর পরিমাণ নির্ণয়ে নেওয়া বিশাল উদ্যোগের মাধ্যমে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

বিড়ালের বংশবিস্তার, শিকারের হার এবং স্থানিক বিন্যাস হতে গণনা করা হয়েছে এরা প্রতিবছর প্রায় ৩৮ কোটি পাখি হত্যা করে। হত্যার হার অস্ট্রলিয়ার আভ্যন্তরীন শুষ্ক অঞ্চলে বেশি এবং এ থেকে ধারনা করা যায় অস্ট্রেলিয়া বন্য বিড়ালগোষ্ঠী স্থানীয় পাখির প্রজাতিগুলোর জন্য বিরাট হুমকী।

১৯০৬ সালে পক্ষীবিদ এ.জে. ক্যাম্পবেল বন্য বিড়ালের মাধ্যমে বিপুলাংশে পাখি নিধনের ঘটনা প্রথম বর্ণনা করেন এবং এই বিষয়ে কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ কামনা করেন। কিন্তু তাঁর এই আহ্বানে সাড়া পড়ে নি এবং সেই সময় হতে বিড়ালের সংখ্যা নিয়ন্ত্রনে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয় নি।

সম্প্রতি বিড়ালের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের জন্য অস্ট্রেলিয়া সরকারের পক্ষ থেকে গবেষণার উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং ১০০ টির মতো স্বাধীন অনুসন্ধান চালানো হয়। এই অনুসন্ধানে দেখা যায় গড়ে একটি বন্য বিড়াল পাঁচদিনে দুটি পাখি খেয়ে ফেলে। সবগুলো গবেষণার প্রাপ্ত তথ্য একত্রিত করে দেখা যায় প্রতিবছর বিড়ালের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার মূল ভু-ভাগে প্রায় ২৭ কোটি পাখি মারা যায়। দ্বীপসমূহের তথ্য যোগ করে মোট বছরে হত্যার শিকার হওয়া পাখির সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৩৮ কোটি।

সংশ্লিষ্ট একটি গবেষণায় দেখা যায় বিড়াল ৩৩০ ধরনের স্থানীয় পাখির প্রজাতিকে হত্যা করে যা অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত মোট প্রজাতির অর্ধেক। এর মধ্যে ৭১ টি প্রজাতি বিলুপ্তির হুমকীতে রয়েছে। আর ৯৯ শতাংশেরও বেশি বিড়ালের প্রজাতি অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয়।

এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে করণীয় কী? অস্ট্রেলিয়ার ফেডারেল সরকারের বিপন্ন প্রজাতি নীতি এই হুমকী গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে বিড়াল এবং শিয়ালের চলাচল নিয়ন্ত্রনে বেড়া দেওয়ার কথা ভাবছে। তবে বেড়া দেওয়ার মাধ্যমে বিপন্ন স্তন্যপায়ী প্রাণীগুলোকে রক্ষা করা গেলেও পাখি রক্ষার ক্ষেত্রে এগুলো সামান্যই অবদান রাখবে। তাই এখন পর্যন্ত এর একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান পাওয়া যায় নি।

অস্ট্রেলিয়ার সরকার তাই আপাতত জনগনকে সচেতন করে নিজেদের বাড়ির পেছনের উঠানে পাখির যত্ন করার জন্য উৎসাহ প্রদানের চেষ্টা করছে। [Sciencealert অবলম্বনে]

-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক

Exit mobile version