সবারই নিশ্চয়ই অভিজ্ঞতা আছে, বিশেষ বিশেষ শব্দ শুনলে আমাদের অসহ্য বোধ হয়, গায়ে কাঁটা দেয়, লোম খাড়া হয়ে যায়। আমাদের দেশে ভবন নির্মানের জন্য ঢালাইয়ের কাজ হয় জনসম্মুখে। ঢালাইয়ের সময় বেলচা দিয়ে যখন কংক্রিট তোলা হয় সেই কর্কশ শব্দ আমি সহ্য করতে পারি না। কারো কারো দুই টুকরো স্টাইরোফোমের ঘষায় উৎপন্ন শব্দ সহ্য হয় না। এর ছাড়া নখ দিয়ে ব্ল্যাক বোর্ডে আঁচড় দিলে, প্লেটের উপর কাঁটাচামচ টেনে নিলে অনেকে সহ্য করতে পারেন না। এর কারণ কী?
গবেষকগণ দেখেছেন, এই ধরনের ‘অশ্রাব্য শব্দ’ যেসব আমাদের শরীরে অস্বস্তি তৈরি করে তার কম্পাঙ্কের সাথে বাচ্চার কান্নার শব্দ কিংবা মানুষের চিৎকারের শব্দের কম্পাঙ্কের মিল আছে। কান্না বা চিৎকার আমাদের অসহনীয় মনে হয় যার ফলে আমরা সেই উৎসে ছুটে গিয়ে সেটা বন্ধ করার চেষ্টা করি। হয়তো কোনো বাচ্চা বিপদে পড়েছে, আমরা সেটা শুনে সহ্য করতে না পেরে ছুটে গিয়ে তার কান্না থামানোর চেষ্টা করি এবং বিপদমুক্ত করি। এর সাথে প্রজাতি হিসেবে আমাদের টিকে থাকার সম্পর্ক আছে। তবে কৃত্রিম নানাবিধ শব্দে এই অস্বস্তি আরো তীব্রতর হতে পারে আমাদের অনভ্যস্ততার কারণে।
গবেষণায় দেখা গেছে আক্রমনাত্মক শব্দগুলো আমাদের চামড়ার পরিবাহীতা পরিবর্তন করে দেয়, যার ফলে এই শব্দে আমাদের স্ট্রেস বেড়ে যায়। তবে এই ধরনের শব্দের কম্পাঙ্ক আমাদের শ্রাব্যতার পাল্লার উপরে বা নীচে থাকে না, বরং মাঝামাঝি ২০০০-৪০০০ কম্পাঙ্কের মধ্যে হয়ে থাকে। এবং এই কম্পাঙ্কের শব্দই মানুষ সবচেয়ে ভালো শুনতে পায়। এই বৈশিষ্ট্যের সাথে মস্তিষ্কের নানাবিধ ব্যাপার জড়িত। সেসব আপাতত উপেক্ষা করছি।
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক