তোড়জোড় দেখে মনে হচ্ছে মানুষের মঙ্গলে অভিযান এখন কেবল সময়ের ব্যাপার। এই বিষয় সবচেয়ে বড় প্রশ্নটি হলো: মঙ্গলে পৌঁছানোর পরপরই সেখানে আমাদের জীবন-যাপন কেমন হবে? ইউনাইটেড আরব আমিরাত মঙ্গলের মতো একটি পরিবেশের অনুরূপ পৃথিবীতে একটি আস্ত শহর গড়ার মাধ্যমে এই প্রশ্নের উত্তর পেতে চেষ্টা করছে।
এই সপ্তাহে, আরব আমিরাত সরকারের বার্ষিক সভায় ১৩৬ মিলিয়ন ডলারে নির্মিতব্য এই শহরের ঘোষনা দেওয়া হয়। এই শহরটির নাম হবে মার্স সায়েন্টিফিক সিটি (Mars Scientific City) এবং এটি মোহাম্মদ বিন রসিদ মহাকাশ কেন্দ্রের একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ। এই পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে ২১১৭ সালের মধ্যে মঙ্গলে একটি মানব বসতি স্থাপন করা।
ড্যানিশ স্থপতি জার্ক ইঙ্গলেস আমিরাতের বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের সাথে নিয়ে এই মঙ্গল শহরের নকশা করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে একশ্রেনী ভবিষ্যতদর্শী ডোমআকৃতির ভবন।
এর অভ্যন্তরে বেশ কিছু গবেষণাগার থাকবে যার মাধ্যমে খাবার, শক্তি এবং পানির চাহিদাপূরণের উপায় ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করা হবে। সেই সাথে এতে একটি জাদুঘর থাকবে যাতে মানবজাতির অদ্যাবধি সেরা সাফল্যগুলো তুলে ধরা হবে। শহরটি আমিরাতের মরুভূমির বালি হতে থ্রিডি প্রিন্টিংএর মাধ্যমে তৈরি করা হবে।
এই শহরে মঙ্গলের তুলনায় বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যেমন: মঙ্গলের মতো এখানে অক্সিজেন উৎপাদন করতে হবে না। তাছাড়া মঙ্গলের মতো এখানে বাসিন্দাদের ক্ষতিকর বিকিরণের মুখে পড়তে হবে না। মঙ্গলে চৌম্বকত্ব নেই বলে সেখানে অতিবেগুনী রশ্মি বর্মে ঢাকার মতো ব্যাবস্থা নেই।
তাছাড়া মঙ্গলের পৃষ্ঠের মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর শতকরা ৩৮ শতাংশ। গড়ে এর তাপমাত্রা পৃথিবীর তুলনায় অনেক কম। গবেষণাগারে মঙ্গলের আবহাওয়া তৈরি করার চেষ্টা করা হবে এবং তাপ ও বিকিরণের সমস্যা প্রতিকার উপায়ও বের করার জন্য কাজ করা হবে। এই শহরের পরিকল্পনায় রয়েচে, একটি দল এর মধ্যে বসবাসের মাধ্যমে মঙ্গলের বিরূপ ও প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার কৌশল উদ্ভাবন করবেন।