[বইটির সূচীপত্র এবং সবগুলো খন্ডের লিংক একত্রে দেখুন এখানে]
হাইজেনবার্গ যখন তাঁর ম্যাট্রিক্স বলবিদ্যা প্রকাশ করলেন, কাছাকাছি সময়ে দ্য ব্রগলি ততদিনে তাঁর তরঙ্গ কণা দ্বিত সমীকরণ প্রকাশ করে ফেলেছেন। তবুও একজনের কাজ সম্পর্কে আরেকজনের জানার উপায় ছিল না। কারণ কিছুদিন আগে-পরে দুজন তাঁদের আলাদা সমীকরণ প্রকাশ করলেও কাজ করেছেন দুজন একই সাথে। একজন জার্মান আরেকজন ফরাসী।
জার্মানি আর ফ্রান্স তখন জন্মের শত্রু। যুদ্ধ-টুদ্ধও বেঁধেছিল দুই দেশের। দ্য ব্রগলি অংশও নিয়েছিলেন সেই যুদ্ধে। হাইজেনবার্গ সামরিক বাহিনিতে ছিলেন কিছুদিন। কিন্তু যুদ্ধ করেছিলেন কিনা সে বিষয়ে কিছু জানা যায় না। মোট কথা ব্রগলি আর হাইজেনবার্গ, কারও উপায় ছিল না পরস্পরের কাজ সম্পর্কে জানার। তাই ইলেকট্রনের কণা-তরঙ্গ দ্বিত ধর্ম সম্পর্কে হাইজেনবার্গ কিস্যুটি টের পাননি। তিনি ইলেকট্রনকে কণা ধরেই তাঁর তত্ত্ব প্রকাশ করেছিলেন। সুতরাং হাইজেনবার্গের বলবিদ্যা গড়ে উঠেছিল কণা ধর্মের ওপর ভিত্তি করেই। ঠিক তখনই কোয়ান্টাম জগতে আবির্ভাব অস্ট্রিয়ান বিজ্ঞানী এরউইন শ্রোডিংগারের। অস্ট্রিয়ান ঊচ্চারণে যার নাম এরভিন শ্রোডিংগার। তিনি শোনালেন তাঁর কালজয়ী তরঙ্গ ফাংশনের গল্প সেই সাথে রচিত হলো একটি বিড়ালের উপাখ্যান।
শ্রোডিংগার হাইজেনবার্গের মতো অতটা তরুণ নন। ২৯২৪ থেকে ১৯২৭। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের স্বর্ণে মোড়ানো তিনটি বছর। সেই সময়টাতে তরুণ বিজ্ঞানীদের জয়জয়কার। হাইজেনবার্গ, পাউলি, ডিরাক সবার বয়স ২০-এর কোঠায়। সাথে কয়েকজন বুড়ো, বর্ন, বোর, রাদাফোর্ড, আইস্টাইন। কিন্তু সেই দিকপলদের একজন ছিলেন মাঝবয়সী। শ্রোডিংগারের বয়স ৩৫-এর ওপরে। ১৮৮৭ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় তাঁর জন্ম। ১৯১১ সালে ভিয়না বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতক হন। এরপর তিনি সুইজ্যারল্যান্ডে চলে যান। সেখানে একসময় পূর্ণ অধ্যাপক পদে যোগদেন জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
১৯২৫ সাল। আইনস্টাইন তখন জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তখন পল ল্যাভেঞ্জা আইনস্টাইনের কাছে একটা প্রবন্ধ পাঠান। প্রবন্ধটি ছিল দ্য ব্রগলির সেই থিসিস পেপার। সে গল্প আগেই করেছি। আইনস্টাইন প্রবন্ধটি পড়ে দ্য ব্রগলির উচ্ছ্বসিত প্রসংশা করেন। সেই প্রশাংসাই গভীরভাবে রেখাপাত করে শ্রোডিংগারের মনে। পরমাণু, ইলেকট্রন আর কোয়ান্টাম তত্ত্ব নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। এরপরই হাইজেনবার্গ-বর্নের ম্যাট্রিক্স বলবিদ্যা। সেগুলোও তাঁর চিন্তার জগতকে এলোমেলো করে দেয়। তিনি বস্তু তরঙ্গকে বলবিদ্যার কাঠামোতে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেন।
চিরায়ত পদার্থের মতে বস্তু ও তরঙ্গ দুটো আলাদা বিষয় আলাদা ধর্ম। দুই ধরনের গতির জন্য দুইরকম গতিবিদ্যা আছে পদার্থবিজ্ঞান। একটা সাধারণ গতিবিদ্যা আরেকটা তরঙ্গগতিবিদ্য। তাই বলে দুটোকে এক সুতোয় গেঁথে যে কাজ করার চেষ্টা করা হয়নি, তা নয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে সে কাজটি করেন আইরিশ বিজ্ঞানী উইলিয়াম রোয়ান হ্যামিল্টন। কিন্তু সেটা ছিল নেহাৎ বস্তুর জন্য। কোয়ান্টাম ধারণা তখন দূর কল্পানেতেও ছিল না।
যাইহোক, দ্য ব্রগলির সমীকরণ নিয়ে কাজ করলেন শ্রোডিংগার। মূলত সেই সমকরণ থেকে ভরবেগের ধারণাটা ধার করেছিলেন। সেই সাথে ইলেকট্রনের তরঙ্গ চরিত্রও। তরঙ্গ ভাবনাটাকে আরেকটু এগিয়ে ভাবলেন। দ্য ব্রগলির ভারবেগ ব্যবহার করে তৈরি করলেন একটা তরঙ্গ সমীকরণ। বস্তু তরঙ্গের সমীককরণ। সাধার চিরয়ায়ত বল্যবিদ্যার সাহায্যে সেই সমীকরণ ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। তাই তিনি হাত বাড়ালেন প্রোবাবিলিটি বা সম্ভবনা তত্ত্বকে।
শ্রোডিংগারের সামনে প্রধান সমস্যাটি ছিল তরঙ্গের অবস্থান। কিছুতেই বস্তু তরঙ্গের অবস্থানটা তিনি ব্যাখ্যা করতে পারছিলেন না। চিরয়াত বলবিদ্যাতেও কিন্তু সমস্যাটা আছে। একটা পুকুরের পানিতে তরঙ্গ তৈরি হলো। সেই তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়বে সারা পুকুর জুড়ে। এক্ষেত্রে কিন্তু পুকুরে পানির অনুগুলো স্থান পরিবর্তন করে না। তারা নিজেরা কাঁপে। সেই কম্পনের ফলের পাশের অণূগুলোকে ধাক্কা দিয়ে তরঙ্গ ছড়িয়ে দেয়। বতাসের ক্ষেত্রেও অনেকটা তেমনই ব্যাপার ঘটে। বাতাসের অণুগুলোর কম্পনের ফলে শব্দ তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু বাতাসের উপদানগুলো স্থান ত্যাগ করে না। নিউটনীয় বলবিদ্যায় বস্তুর আকার আকৃতি যেমনই হোক সেটার গতিবেগ নির্ণয় করা যায় সমীকরণের সাহয্যে। তেমনি তরঙ্গের আকার, বিস্তার যেমনই হোক তরঙ্গ সমীকরণের সাহায্যে তরঙ্গের গতি-প্রকৃতি সহজেই বের করা যায়। শ্রোডিংগার চাইলেন সেভাবে একটা বস্তু তরঙ্গের সমীকরণ তৈরি করতে। কিন্তু সমস্যা হলো, এক্ষেত্রে ইলেকট্রন বা বস্তু নিজেই এগিয়ে চলে তরঙ্গাকারে। তাই ক্ল্যাসিক্যাল তরঙ্গের সাথে এই তরঙ্গের তুলনা চলে না। ক্ল্যাসিক্যাল তরঙ্গে তরঙ্গ ফাংশন ব্যবহার করে তরঙ্গের অবস্থান বের করা যায়। শ্রোডিংগার তেমনই একটা তরঙ্গ ফাংশনের খোঁজ করলেন। সেটা হলো Ψ। এটা দিয়েই তিনি পরমাণুর ভেতরে একটা নির্দিষ্ট সময়ে ইলেকট্রন তরঙ্গের অবস্থান, প্রকৃতি ইত্যাদি বের করার চেষ্টা করলেন।
এই তরঙ্গ ফাংশনের আলাদা বৈশিষ্ট্য কী? চিরয়াত তরঙ্গ ফাংশনের চেয়ে তার বৈশিষ্ট্য আলাদা হতে হবে। শ্রোডিংগার লক্ষ্য করলেন এই তরঙ্গ ফাংশন সাধারণ অর্থে পরিমাপযোগ্য রাশি নয়। তবে গণিতের ভাষায় অপিরমাপযোগ্য বলে কিছু নেই। যেসব রাশি সাধারণ সংখ্যা দিয়ে পরিমাপ করা যায় না তাদের সাথে জুড়ে দেওয়া হয় কাল্পনিক রাশি। সাধারণ আর কাল্পনিক রাশির মিশেলে তৈরি হয় একটি জটিল সংখ্যা। শ্রোডিংগার বললেন Ψ (শাই) আসলে একটা জটিল রাশি। তাই এর কোনো ভৌত তাৎপর্য থাকবে না। সুতরাং ইলেকট্রন তরঙ্গের অবস্থান কোনো ভৌত রাশি দিয়ে পরিমাপ করা সম্ভব নয়। তবে বিজ্ঞান ও গণিতে অসম্ভব বলে কিছু নেই। জটিল সংখ্যার জন্মই হয়েছে সাধারণ জ্ঞানের বিচরে যেসব রাশি অপরিমাপযোগ্য মনে হয় তাদেরকে পরিমাপের আওতায় আনার জন্য। শ্রোডিংগারও তাই করলেন এই Ψ এর সাহায্যে। এর আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে দেখে নেওয়া যাক ইলেকট্রন তরঙ্গের জন্য যে সমীকরণটি তৈরি করেছিলেন শ্রোডিংগার, সেটার চেহারা কেমন
এখানে, E হলো ইলেকট্রনের শক্তি, m ইলেকট্রনের ভর, U(x) ইলেকট্রনের বিভব শক্তি; নিউক্লিয়াস থেকে কী পরিমাণ দূরত্বে ইলেকট্রন কী পরিমাণ বল অনুভব করবে সেটা বলে দেয় এই বিভব শক্তি, ব প্ল্যাঙ্কের সমীকরণ আর Ψ হলো তরঙ্গ ফাংশন।
প্রিয় পাঠক, এখানে ক্যালকুলাস করা হয়েছে। আমরা চাইলে পুরো সমীকরণটার ব্যাখ্যা গণিতের ভাষায় ব্যাখ্যা করতে পারি। কিন্তু পুরো ব্যাখ্যাটা তখন জটিল গাণিতিক সমীকরণে রূপ নেবে। সাধারণ পাঠকদের কাছে সেটা দুর্বোধ্য লাগতে পারে। আমরা সেদিকে না গিয়ে বরং সমীকরণ আর তরঙ্গ ফাংশনের তাৎপর্যটা ব্যাখ্যা করতে পারি।
তরঙ্গ ফাংশন Ψ আসলে কোনো নির্দিষ্ট স্থানে ইলেকট্রন পাওয়ার সম্ভবনা কতটুকু বলে দেয়। শ্রোডিংগার বললেন ইলেকট্রনকে কোনো একটি নির্দিষ্ট অবস।থানে খোঁজার ছেষ্টা করা বৃথা। কক্ষপথে বা অন্য কোথাও ইলেকট্রনের সুনির্দিষ্ট অবস্থান নির্ণয় করা যাবে না। তারচেয় আমরা ইলেকটন কণার বদলে ইলেকট্রনে মেঘের কথা কথা ভাবতে পারি। কোনো একটা এলাকায় ইলেকট্রনের এই মেঘ আবদ্ধ থাকবে। সেই এলাকার যেকোনো বিন্দুতে ইলেকট্রন থাকতে পারে। কিন্তু কোন বিন্দুতে থাকবে সেটা সুনির্দিষ্ট করে বলা কখনোই সম্ভব নয়।
শ্রোডিংগার বললেন তরঙ্গ ফাংশন Ψ-ই বলে দেয় একটা বিন্দুতে ইলেকট্রকে পাওয়ার সম্ভববনা কতটুকু। তবে সেই বিন্দুটির অবস্থান হবে ইলেকট্রনের মেঘের এলাকার ভেতর। কোনো কিছু পাওয়ার সম্ভবনার ব্যাপার-স্যাপার থাকলে সেখানাকর গাণিতিক সীমা হয় ০ থেকে ১ এর মধ্যে। কোনস্থানে কোনো বস্তুকে যদি নিশ্চিতভাবে পাওয়ার সম্ভবনা থাকে সেখানে সম্ভাবনার মান ১। সম্ভব্যতা ১ মানে সেখানে পাওয়ার সম্ভভবনা শতকরা একশ ভাগ (১০০%)। কোনো স্থানে সম্ভাব্যতার ০.৬ মানে সেখানে বস্তুটি পাওয়ার সম্ভাবন ৬০%। সম্ভব্যতার মান গাণিতিকভাবে ঋণাত্মক সংখ্যাও হতে পারে। তবে বাস্তব সম্ভবনা কখনো ঋণাত্মক হতে পারে না, আবার ১ এর চেয়ে বেশিও হতে পারে না।
ইলেকট্রন মেঘের ছবিটা কেমন একটু কল্পনা করতে পারি। তবে সাবধান, কল্পনার সাথে কোয়ান্টাম ইলেকট্রন মেঘকে পুরোপুরি মেলাতে যাবেন না, তাতে ভুলবার্তা পৌঁছবে মগজে।
উদাহরণটা আগেও একবার দিয়েছি। আবার দিচ্ছি। ঘরের ঘুরতে থাকা একটা ফ্যানে দিকে তাকান। দেখবেন পাখাগুলো ঘুরছে। কিন্তু পাখাগুলো কি আপনি সত্যিই দেখতে পারছেন? পারছেন না। কারণ ফ্যানের দ্রত ঘুর্ণনগতি আপনার মস্তিস্কে অন্যরকম ছবি তৈরি করছে। আপনি দেখছেন ফ্যানের পাখার বদলে অস্পষ্ট বৃত্তাকার চাকতি ঘুরছে। চাকতিটা বেশ স্বচ্ছ। অথচ ফ্যানের পাখা কিন্ত স্বচ্ছ নয়। তিনটে পাখায় অস্বচ্ছ নিরেট। কিন্তু প্রতিট পাখার পর বেশ খানিকটা ফাঁকা জায়গা। সেজন্য পাখার পেছনে ছাদেটা আপনি দেখতে পারছেন পাখার ফাঁক দিয়ে। পাখাগুলো দ্রুত ঘুরছে। তাই দ্রুতই একটা ফাঁকা জায়গায় আরেকটা পাখা চলে আসছে। তার আগের পাখাটা যেখানে ছিল সেই জায়গাটা আবার ফাঁকা হচ্ছে। ফাঁকা জায়গাগুলোতে পাখাগুলো খুব দ্রুত অবস্থান নিচ্ছে, দ্রুতই সেখান থেকে চলে যাচ্ছে।
পাখাটাকে নিরেট বস্তু বলে বোঝা যাচ্ছে না। তাই বলে পাখান নিরেট নয়, এটা ভাবলে তো ভুল হবে, না-কি? কিন্তু কোন এক মূহূর্তে যদি আপনাকে বলা হয় পাখার অবস্থান কোথায়, আপনি নিশ্চিতভাবে বলতে পারবেন না। পাখার মেঘের বৃত্তটির ভেতর যেকোনো স্থানে পাখাটা থাকার সম্ভবনা আছে। ইলেকট্রন তরঙ্গ গতিতে চলছে। তার গতিও খুব দ্রুত। আকার খুব ক্ষুদ্র। এত ক্ষুদ্র বস্তুর কণিকা আকারে তার অবস্থান কোথায় সেটা কখনোই নিশ্চিতভাবে বলা কঠিন। তবে বলা যায়। কীভাবে সেটা জানার জন্য আমরা পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য অপেক্ষা করব। তরঙ্গ ফাংশন Ψ ব্যবহা করে শ্রোডিংগার নির্দিষ্ট একটা এলাকায় ইলেকট্রন মেঘের ভেতর ইলেকট্রনের অবস্থান ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলেন।
কিন্তু এটা জটিল সংখ্যাযুক্ত রাশি। এর সাথে জড়িয়ে আছে কাল্পনিক সংখ্য i । Ψ-এর সাহায্যে ইলেকট্রনের গতি-প্রকৃতি বোঝা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছিল। শ্রোডিংগার নিজেই একে ঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারছিলেন না। তখন ম্যাক্স বর্ন সম্ভব্যতা তত্ত্ব (probability) ব্যবহার তরঙ্গ ফাংশনের ব্যাখ্যা দাঁড় করাবার চেষ্টা করেন। এজন্য তিনি Ψ এর বর্গীয় মডুলাস ব্যবহার করে কাল্পনিক রাশিকে বাস্তব রাশিতে পরিবর্তন করেন। বর্ন Ψ-এর বদলে ব্যবহার করলেন ।Ψ।^২। এটা বাস্তব ও পরিমাপযোগ্য রাশি। এর সাহায্যে ব্যাখ্যা করলেন কোনো এক স্থানে ইলেকট্রন মেঘের ভেতর ইলকট্রন কণিকা পাওয়া সম্ভবনা কতখানি। সেই কাজে সফল হলেন বর্ন।
একটা নির্দিষ্ট অবস্থানে বস্তু বা ইলেকট্রনকে পাওয়ার সম্ভবনা ।Ψ।^২-এর সমানুপাতিক হবে। ।Ψ।^২-এর মান যত বেশি ইলেকট্রন পাওয়ার সম্ভবনা তত বেশি। এর মান কম হলে ইলেকট্রন পাওয়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে। ।Ψ।^২-এর মান যদি শূন্য হয়ে যায়, তখন আর ওই বিন্দুতে ইলেকট্রন পাওয়ার সম্ভবনা আর থাকে না।
মোটকথা ম্যাক্স বর্ন শ্রোডিঙগারের তরঙ্গ ফাংশনকে ভৌতভাবে পরিমাপ যোগ্য করে তুললেন। সেইসাথে শ্রোডিংগারের তরঙ্গ সমীকরণ আবির্ভূত হলো কোয়ান্টামের জন্য সত্যিকারের বলবিদ্যা রূপে। এতে এটা দিয়ে ইলেকট্রনের তরঙ্গ চরিত্র ভালোভাবে ব্যাখ্যা ব্যাখ্যা করা যায় অনেক সহজে। কণা তরঙ্গের জন্যও একটা পরিপূর্ণ বলবিদ্যা হয় এই সমীকরণের সাহায্যে। হাইজেনবার্গের ম্যাট্রিক্স বলবিদ্যার চেয়ে এটার ব্যবহারও সহজ ছিল। পরবর্তীকালে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সমৃদ্ধ ইতিহাস রচিত হলো শ্রোডিংগারের তরঙ্গ সমীকরণ ও তরঙ্গ ফাংশন ব্যবহার করে। এ কাজের পুরস্করও পেলেন শ্রোডিংগার। ১৯৩৩ সালে তাকে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হলো।
[বইটির সূচীপত্র এবং সবগুলো খন্ডের লিংক একত্রে দেখুন এখানে]
বিজ্ঞান পত্রিকায় সম্পূর্ণ বইটি পড়া যাবে। তবে কেউ সংগ্রহে রাখতে চাইলে অনলাইনে কেনা যাবে ০১৫৫ ৭৭৭ ৯৩২৩ নম্বরে ফোন করে।
-আব্দুল গাফফার রনি
বিজ্ঞান লেখক
[লেখকের ফেসবুক প্রোফাইল]