বিজ্ঞান পত্রিকা

জার্মানীর বিজ্ঞানীরা বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘কৃত্রিম সূর্যের’ সুইচ চালু করেছেন

প্রথমবারের মতো জার্মানীর বিজ্ঞানীগণ বিশ্বের সর্ববৃহৎ ‘কৃত্রিম সূর্যের’ সুইচ চালু করেছেন যেটি ভবিষ্যতে হাইড্রোজেন উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।

জার্মানীর জুলিখে স্থাপিত এবং জার্মান এ্যারোস্পেস সেন্টার পরিচালিত এই বাতিটি ১৪৯ টি জেনন বাতি দিয়ে তৈরি যার আলো সূর্যের আলোর অনুকরণে একটি ক্ষুদ্র বিন্দুতে একীভূত হবে, এতে পানি বিশ্লেষিত হয়ে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন উৎপাদিত হবে।

এই প্রকান্ড যন্ত্রের টাওয়ার ১৪ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট এবং প্রস্থে ১৬ মিটার। ২০ সেন্টিমিটার বনাম ২০ সেন্টিমিটারের একটি বিন্দুতে এর আলো একীভুত হয়ে ৩০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা তৈরি করতে পারে। তবে পরীক্ষার সময় এটি কেবল ১৫ থেকে ২০ মিনিট চালানো হয়েছে যার ফলে সামান্য পরিমান হাইড্রোজেন উৎপাদন করা গেছে যদিও তাত্ত্বিক ভাবে এটি একটানা ঘন্টার পর ঘন্টা এমনকি একটি সম্পূর্ণ দিন চালু থাকতে পারে।

এই প্রকল্পের সাথে যুক্ত দ্মিত্রিজ লাবার নামের একজন গবেষক ও প্রকৌশলী এ সম্বন্ধে বলেন, “আমারা এই বাতিটি গত দুই মাস ধরে জ্বালাচ্ছি, তবে এবারই প্রথম জনসম্মখে এটি দেখানো হলো।”

বাতিটির ক্ষমতা ৩৫০ কিলোওয়াট এবং এটি পৃথিবীপৃষ্ঠে সূর্যের আপতিত আলোর তুলনায় ১০,০০০ গুণ তীব্র আলো উৎপাদন করার কথা। এর অতিবেগুনী রশ্মির বর্ণালী সূর্যের অনুরূপ। যখন একটি ছোট রিয়্যাক্টর ডিভাইসের ধাতব পর্দায় কেন্দ্রীভুত করা হয় এটি পানিকে বিভাজিত করে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন উৎপন্ন করে।

হাইড্রোজেন একটি অতিগুরুত্বপূর্ণ মৌল, বিশেষ করে জ্বালানী হিসেবে ব্যাবহারের ক্ষেত্রে এটি অতিদক্ষ এবং এতে কোনো কার্বণ নিঃসরণ হয় না। কিন্তু পৃথিবীতে এটি পৃথক অবস্থায় পাওয়া যায় না।

তবে সৌরবাতিটি অদ্যাবধি কেবল একটি ধারনাকে প্রমাণ করার জন্য। কারণ এতে ঘন্টায় যে পরিমান বিদ্যুত খরচ হবে তা চারজনের একটি পরিবারের একবছরের বিদ্যুৎ খরচের সমান। এতে যে পরিমান তাপ উৎপন্ন হয় তা একজন মানুষকে ভষ্মীভূত করে ফেলতে পারে নিমিষেই।

তবে এই প্রকল্পের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য হলো বৈদ্যুতিক বাতিগুলোকে সূর্যকিরণ দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা এবং এর কলেবর বৃদ্ধি করে বিপুল পরিমান এবং ব্যবহারযোগ্য হাইড্রোজেন তৈরি করা।

লাবার বলেন, “এই প্রকল্পের পরবর্তী ধাপ হচ্ছে এই রিএ্যাক্টরটিকে সৌর কারখানার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যেখানে এটি বাস্তব পরিস্থিতিতে পরীক্ষিত হবে।”

-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক

Exit mobile version