আমরা এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে জীবাণুগুলোর প্রতিরোধ গড়ে ওঠার কথা কিছুদিন হলো শুনছি। তবে এটিকে হয়তো পুরোপুরি আমলে নিচ্ছি না, বা যতটা পরিস্থিতি তারচেয়ে বেশী প্রচার করা হচ্ছে বলে ধারনা করে বেড়াচ্ছি। যাঁদের এধরনের অভিমত, তাঁদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি দেখিয়ে দেবে যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা অঙ্গরাজ্যের এই ঘটনা।
নেভাদা অঙ্গরাজ্যের গণস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি একজন নারীর মৃত্যুর সংবাদ দিয়েজেন যার মৃত্যু হয়েছে অপ্রতিরোধ্য জীবাণুর সংক্রমণে। এই ধরনের অপ্রতিরোধ্য জীবাণুগুলো সুপারবাগ নামে পরিচিত। পরীক্ষা করে দেখা গেছে তাঁর শরীরে আক্রমণকারী সুপারবাগটি ২৬ টি ভিন্ন ভিন্ন এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষম।
রোগ নিয়ন্ত্রন কেন্দ্রের একজন মেডিক্যাল অফিসার ড. আলেকজান্ডার ক্যালেন এই প্রসঙ্গে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে পাওয়া যায় এমন সবকিছু দিয়ে একে বিনাশ করার চেষ্টা করা হয়েছে … এবং এর কোনোটিই কাজ করেনি।” মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ নিরাময়ের অধ্যাপক ড. জেমস জনসন বলেন, “আমার মতে এটি অনাগত আশঙ্কাজনক ভবিষ্যতের সংকেত স্বরূপ।” অন্যান্য বিজ্ঞানীরাও মতামত দেন, বিভিন্ন দেশের সরকার এবং গবেষকদের এন্টিবায়োটিকের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার সময় এসে গেছে।
যে রোগী অপ্রতিরোধ্য ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফেরার আগে দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থান করেছিলেন যেখানে এন্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে জীবনুর প্রতিরোধ ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় বেশী। সেখানে থাকা কালে দুইবছর আগে তাঁর উরুর হাড় ভেঙ্গে গিয়েছিলো যা থেকে পরে হাড়ে এবং নিতম্বে সংক্রমন ঘটে। গত দুই বছরে বিভিন্ন সময় তিনি ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এই নারী Klebsiella pneumoniae নামের একটি ব্যাক্টেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন যেটি মূত্রনালীর সংক্রমনের জন্য সমাধিক পরিচিত।
ভারতের হাসপাতালে চিকিৎসায় কাজ না হওয়ায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গিয়ে চিকিৎসা নেন, কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয় নি। [statnews.com অবলম্বনে]
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক