বিজ্ঞান পত্রিকা

চাঁদে ভ্রাম্যমাণ পানি উৎপাদন যন্ত্র প্রেরণের পরিকল্পনা করছে নাসা

নাসার বর্তমান পরিকল্পনা অনুসারে একদিন চাঁদের বুকে রোভার বা ভ্রমণকারীরা তাদের প্রয়োজনীয় পানি নিজেরাই উৎপাদন করতে সক্ষম হবেন। প্রকৌশলীরা মূল্যবান খনিজ পদার্থপূর্ণ স্থানের সন্ধানে ভ্রমণকারী একটি লুনার রিসোর্সের নকশা চূড়ান্ত করেছেন যা আগামী দশকে চাঁদের ভূমিতে ভ্রমণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। একবার যখন এটি তৈরী হবে এবং চালু হয়ে যাবে তখন রোভার চাঁদের বুকে একটি দীর্ঘমেয়াদী বসতি প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।

লুনার রিসোর্স প্রস্পেকটর নাসার In-Situ Resource Utilisation (ISRU)  কৌশলের অংশ যা শুধুমাত্র অন্যান্য গ্রহ এবং চাঁদে পাওয়া সম্পদ মানুষের জীবন রক্ষায় ও বসতি স্থাপনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছেনা সাথে সাথে পৃথিবী থেকে এসব পরিবহনের কাজও করছে।

আমরা কখনই মঙ্গলে উপনিবেশ স্থাপনের আশা করতে পারিনা যদি না ঔপনিবেশিকরা তাদের দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজনীয় উপকরণ বহন করে নিতে না পারে। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব একটি ঔপনিবেশিক দলকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে।

স্বয়ংসম্পূর্নতার অংশ হিসেবেই এবার নাসা লুনার রিসোর্স প্রস্পেকটর নামে একটি রোবট যন্ত্র চাঁদে পাঠানোর পরিকল্পনা করেছেন। লুনার রিসোর্স প্রস্পেকটর যখন চাঁদে পৌছুবে সৌরচালিত রোভার সেখানে পানি, হাইড্রোজেন এবং ভূ-অভ্যন্তরের অন্যান্য পদার্থের অনুসন্ধান পরিচালনা করবে। ঠিক যে রকম করে মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে করে আসছে, এখন সেই কাজটিই করা হবে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে।

এই প্রযুক্তির মূল চাবিকাঠি হচ্ছে নিউট্রন এবং ইনফ্রারেড বর্ণালীবিক্ষণ যা জ্বালানী ও আলো ব্যবহার করে নির্ধারণ করতে পারবে চাঁদের মাটি ও পাথর কি কি উপাদান দিয়ে তৈরী হয়েছে।

এছাড়াও চাঁদের মাটি খুঁড়ে তা সংগ্রহ ও গরম করার জন্য এর একটি নিজস্ব চুলা রয়েছে। এই চুলার মাধ্যমেই বিভিন্ন মূল্যবান খনিজ পদার্থে রাসায়নিকের উপস্থিতি সম্ভব হলে তা থেকে পানি বের করার চেষ্টা করা হবে।

তবে সবকিছু পরিকল্পনা মতো চলতে থাকলে বিজ্ঞানীরা পৃথবীর বাইরের কোন গ্রহে প্রথমবারের মতো পানি দেখতে যাচ্ছে। চাঁদের ভূখন্ড পাথুরে, অমসৃণ ঢাল এবং কম মাধ্যাকর্ষণ পরিবেশ (পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের এক-ষষ্ঠাংশ) এসব কিছুই রোবারকে মানিয়ে নিতে হবে। নাসার বর্তমান নমুনাগুলো ২৫ ডিগ্রীর কোণ পর্যন্ত ঢাল মোকাবেলা করতে পারে।

যদি লুনার রিসোর্স প্রস্পেকটর অভিযান সফল হয় তবে এটি বিজ্ঞানীদের কাছে বহু দরকারী তথ্য সরবরাহ করবে।  আর এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ মনুষ্যবাহী অভিজানের জন্য চাঁদ ও অন্যান্য গ্রহ থেকে কিভাবে পানি পাওয়া যাবে এবং তা সংগ্রহ করতে হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত গবেষণা করতে পারবে।

মানবজাতি সর্বশেষ চাঁদের বুকে পা রেখেছিলো ১৯৭২ সালে।

নিচের ভিডিওতে দেখানো হয়েছে লুনার মিশনে রোভাবের কার্যক্রমের এনিমেশন। [সাইন্সএলার্ট- অবলম্বনে]

-শফিকুল ইসলাম

 

Exit mobile version