বিজ্ঞান পত্রিকা

প্রথমবারের মতো বিড়াল থেকে মানুষের মাঝে ছড়ালো বার্ড ফ্লু

নিউইয়র্ক সিটির এক বাসিন্দা নিজের আশ্রয় দেয়া ভাইরাসে আক্রান্ত বিড়াল থেকে বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছেন। নিউইয়র্কের  NYC Department of Health নিশ্চিত করেছে এই প্রথমবারের মতো বিড়ালের মাধ্যমে বার্ড ফ্লুর H7N2 ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করেছে। যদিও মানুষের মাঝে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি অত্যন্ত কম তবে স্বাস্থ্য বিভাগ স্থানীয় বিড়াল মালিকদের পরামর্শ দিয়েছেন তারা যেন তাদের বিড়ালের উপসর্গগুলো নজরে রাখে।

NYC স্বাস্থ্য বিভাগের রোগ নিয়ন্ত্রণের ডেপুটি কমিশনার জয় ভার্মা বলেন, “একটি ভাইরাস প্রত্যেকবার নতুন নতুন প্রাণীকে বেছে নেয়, যেমন একটি পাখি  কিংবা বিড়াল। আমরা বিড়ালের স্বাস্থ্য এবং যেসকল মানুষ এদের পরিচর্যা করে উভয়কেই নিয়ে উদ্বিগ্ন।”

ম্যানহাটন এনিমেল শেল্টারে এই ভাইরাসটি কমপক্ষে ৪৫ টি বিড়ালকে আক্রান্ত করেছে এবং এখানকার এক পশু চিকিৎসক এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার মাধ্যমে এটা প্রকাশ পেলো যে ভাইরাসটি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।

যদিও বিড়াল থেকে মানুষের মাঝে সহজেই এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার মতো কোন লক্ষণ দেখা যায়নি তবে গত সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত নিউইয়র্কের প্রায় ১০০ টিরও বেশী বিড়ালের H7N2 ভাইরাস পরীক্ষায় সনাক্ত হয়েছে এবং এটি বিড়াল থেকে বিড়াল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

H7N2 ভাইরাসটি বিড়াল থেকে মানুষের মাঝে সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা শুধু এটাই প্রথম নয়, পাখি থেকে বিড়ালে ছড়িয়ে পড়াটাও প্রথম।

কিন্তু ভালো খবর হলো এই ইনফ্লুয়েঞ্জা তেমন কোন তীব্র আক্রমণকারী নয় এবং আক্রান্ত পশু চিকিৎসকের মাঝে অল্প সময়ের জন্যই এর উপসর্গ দেখা গিয়েছিলো। বর্তমানে তিনি পুরোপুরি সুস্থ আছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হয়েছে পশু চিকিৎসকের সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি বেশী ছিলো কারণ তিনি অসুস্থ্য বিড়ালের শ্বাস প্রশ্বাসের সংস্পর্শে ছিলেন। ভাইরাস ছড়ানো বিড়ালটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে তবে এটা এখনও পরিষ্কার নয় যে কিভাবে বিড়ালগুলো নিজেরা আক্রান্ত হয়েছে।

ভাইরাসটি এতই গুরুতর হয়ে উঠেছে যে আক্রান্ত বিড়ালটি ইতিমধ্যেই দূর্বল হয়েছে। তবে অবশিষ্ট বিড়ালদের সম্পূর্ণ সুস্থ্য হওয়ার ব্যাপারে চিকিৎসকগণ এখনও আশাবাদী।

এর আগে ২০০২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে H7N2 টার্কি ও মুরগির মাঝে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পরেছিলো কিন্তু এসময় ভাইরাসের উৎস অজানাই ছিলো। অপরদিকে গত বছরের শেষের দিকে সমগ্র ইউরোপ জুড়ে পাখিসহ হাঁস-মুরগির খামারে H5N8 ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিশেষজ্ঞগণ তা মানুষের ঝুঁকির কারণ হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। [সায়েন্সএলার্ট-অবলম্বনে]

শফিকুল ইসলাম

Exit mobile version