বিজ্ঞান পত্রিকা

মহাবিশ্ব দাপিয়ে বেড়ানো পঞ্চম একটি মৌলিক বলের অস্তিত্বের সম্ভাবনা

আমাদের বর্তমান পদার্থবিদ্যার মহাবিশ্ব শাসন করছে চারটি মৌলিক বলের তত্ত্ব: মহাকর্ষ, তড়িৎচৌম্বক, সবল এবং দূর্বল নিউক্লিয় বল। সম্প্রতি একটি অদ্ভুতুড়ে পরমাণু অাভ্যন্তরীন কণা আবিস্কৃত হওয়ায় ধারনা করা হচ্ছে প্রকৃতিতে পঞ্চম একটি মৌলিক বলের অস্তিত্ব থাকলেও থাকতে পারে।

আলাদাভাবে কাজ করা বিভিন্ন গবেষকদলের অনুসন্ধানেও যদি একই ধরনের একটি বোসন কণিকা ( উপরে যেই নতুন কণিকাটির কথা বলা হয়েছে ) আবিষ্কৃত হয় তাহলে কণা পদার্থবিজ্ঞানের স্ট্যান্ডার্ড মডেলটিকে বদলে দিতে হতে পারে।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া আরভাইনের তাত্ত্বিক পদার্থবিদ্যার গবেষক এবং এই গবেষণার একজন সহগবেষক টিমোথি টেইট বলেন, “যদি এটা সত্য হয় তাহলে এই কণাটিই সামনে কণা পদার্থবিদ্যার ভবিষ্যত কোন দিকে যাবে সেই বিষয়ে আমাদের গাইড করবে।”

চার প্রকার মৌলিক বলের মধ্যে মহাকর্ষ প্রকান্ড আকারের গ্যালাক্সিগুলোর আকৃতি দান করে, সবল ও দুর্বল নিউক্লিয় বল পরমাণুর অভ্যন্তরের বিভিন্ন কণিকার মধ্যে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া তত্ত্বাবধান করে। আর তড়িৎ-চৌম্বক বল অণু-পরমাণুর মধ্যে ক্রিয়াশীল থাকে। একত্রে এই চারটি মৌলিক বলের কর্মকান্ডেই এই মহাবিশ্ব বর্তমানে যেভাবে পরিচালিত হচ্ছে সেভাবে ক্রিয়ারত থাকে।

এতদিন এমনটিই জানা ছিলো। তবে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া আরভাইনের গবেষকগণ এখন পঞ্চম একটি বলের কথা বলছেন। এই বলটি বহন করে নতুন আবিষ্কৃত একটি বোসন কণিকা, আপাতত যার নাম দেওয়া হয়েছে বোসন এক্স। এই বল তড়িৎচৌম্বক বলের সাথে তুলনীয়। পার্থক্য হচ্ছে তড়িৎচৌম্বক বল যেখনে ইলেক্ট্রন এবং প্রোটনের মধ্যে কাজ করে আর নিউট্রনকে উপেক্ষা করে, সেখানে এই বল ইলেক্ট্রন ও নিউট্রনের মধ্যে কাজ করে এবং প্রোটনকে উপেক্ষা করে।

বিজ্ঞানীরা সর্বপ্রথম এই বল সম্বন্ধে ধারনা করেছিলেন হাঙ্গেরিয়ান গবেষকদের প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র থেকে যারা ‘ডার্ক ফোটন’ (ডার্ক ম্যাটারবাহী কণিকা) এর অনুসন্ধান চালিয়েছিলেন এবং তাদের তথ্যে অদ্ভুত সংকেত পেয়েছিলেন। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোনিয়া আরভাইনের গবেষকগণ সেই গবেষণাপত্রটি নানা ভাবে বিশ্লেষণ করে ডার্ক ফোটনের ব্যাখ্যা বাতিল করে দিয়েছেন এবং তার বদলে পঞ্চম একটি মৌলিক বলবাহী বোসন কণিকার উপস্থিতির সম্ভাবনার কথা বলেছেন। [ latimes.com অবলম্বনে ]

-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক

Exit mobile version