বিজ্ঞান পত্রিকা

বার্ধক্যরোধ এখন শুধু সময়ের ব্যাপার: বয়সের গতি উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা

আপনি যখন বুড়ো হয়ে যাবেন তখন নিজেই তা বুঝতে পারবেন। শুধু ধুষর হয়ে যাওয়া চুল কিংবা কুঁচকে যাওয়া চামড়া দেখেই যে বুঝবেন তা নয়, বরং বয়সের সাথে সাথে অনেক রোগ এসে বাসা বাঁধবে শরীরে। এই কারণেই বিজ্ঞানীরা বুড়িয়ে যাওয়ার কারণ উদ্ঘাটনে সচেষ্ট হয়েছেন। কোষীয় পর্যায় বার্ধক্য কিভাবে তৈরি হয় তা অনুসন্ধান করেছেন এবং অবশেষে এই বুড়িয়ে যাওয়া থামিয়ে দেওয়ার এমনকি এর গতি উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। শেষোক্ত বিষয়টি নিয়েই কাজ করছেন Salk Institute এর গবেষকগণ।

এই গবেষনায় স্টেমসেলগুলোকে প্রতিলিপি তৈরির অনুকূল পরিবেশ দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে। বিশেষ বিশেষ পরিবেশে বিশেষ জিন কার্যকর হয়, যারফলে ওই জিনের বৈশিষ্ট্য সম্ভলিত কোষ তৈরি হয়। আর স্টেমসেল হলো এমন ধরনের কোষ যা প্রয়োজনীয় সময়ে অন্য যেকোনো ধরনের কোষে রূপান্তরিত হতে পারে।

এই গবেষণায় গবেষকগণ কোষীয় নবযৌবন পুনরুদ্ধার নামক এক পদ্ধিতি গ্রহণ করেছেন কোষীয় প্রোগ্রামিং পরিবর্তন করে, যার ফলে চারটি বিশেষ ধরনের জিন সক্রিয় হয়। এদের একযোগে ইয়ামানকা ফ্যাক্টর বলা হয়। এই প্রক্রিয়ায় কোনো কোষ, স্টেমসেলে রূপান্তরিত হওয়ার প্রতি আবিষ্ট হয় এবং স্টেমসেলের মতোই আচরণ করে।

এই উদ্যোগের ফলে কাজ হয়। গবেষণাগারের পেট্রিডিশে মানুষের চামড়ার বৃদ্ধ কোষকে এই প্রক্রিয়ায় তরুন কোষের বৈশিষ্ট্য সম্বলিত করা যায় যাদের আয়ু ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

তবে এধরনের জিন সক্রিয়করণ যে সবসময় ভালো ফলাফল বয়ে আনবে তা নাও হতে পারে। যেমন: জিন সক্রিয় করে যদি একটি কোষের বিভাজনের হার বাড়িয়ে দেওয়া হয় যার ফলে সে বেশি কোষ উৎপন্ন করে বার্ধক্য হ্রাস করে তার ফলশ্রুতিতে কোষ বিভাজন নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ক্যান্সারও তৈরি করতে পারে।

তবে গবেষকদল এই সমস্যা মোকাবেলা করারও একটি পদ্ধতি খুঁজে পেয়েছেন। তাঁরা মানুষ এবং ইঁদুরের দেহে প্রোজেরিয়া নামে একটি জিনগত রোগ পর্যবেক্ষণ করেছেন। এবং এর মাধ্যমে তাঁরা ইয়ামানকা ফ্যাক্টর স্বল্প সময়ে চালানোর মতো কৌশল উদ্ভাবন করেছেন। এর মাধ্যমে কোষগুলো অনিয়ন্ত্রিত বংশবৃদ্ধি না করে সুনির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বংশবৃদ্ধি করবে।

এই গবেষণা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও যেহেতু মূল কৌশল উদ্ভবিত হয়েছে তাই একসময় না একসময় এর মাধ্যমে বার্ধক্যের গতি উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার আশা করাই যায়। [ futurism.com অবলম্বনে ]

-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক

Exit mobile version