বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের মনে হতে থাকে বছরগুলো বুঝি দ্রুত ফুরিয়ে গেল! কিন্তু জোতির্বিদগণ বলছেন, পৃথিবীর দিনের দৈর্ঘ্য ক্রমশঃ বড় থেকে বড় হচ্ছে।
গবেষক দল দেখতে পেয়েছেন পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি (আন্হিক গতি) ক্রমশঃ কমে যাচ্ছে, অর্থাৎ আগের চেয়ে ক্রমশঃ ধীরে ঘুরছে, তাই প্রতিটি দিনের দৈর্ঘ্যও বেড়ে যাচ্ছে। তাঁরা হিসেব করে দেখেছেন প্রতি ১০০ বছরে একেকটি দিন ১.৮ মিলি সেকেন্ড করে বড় হয়।
এটা পরিমানটি খুব বড় নয়, এই হারে যদি আমরা এগিয়ে যাই তাহলে প্রতিটিন দিন ১ মিনিট করে বড় হতে ৩৩ লক্ষ বছর লাগবে আর অতিরিক্ত একটি ঘন্টা প্রতিদিনের সাথে যুক্ত করতে প্রয়োজন হবে ২০ কোটি বছর।
তবে সময় বৃদ্ধির হার খুব সামান্য হলেও যথাযথ ভাবে তা নির্ণয় করা, এবং এই সময়বৃদ্ধির পেছনে যেসব নিয়ামক জড়িত সেগুলো যথাযথভাবে সনাক্ত করা পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
প্রকৃতপক্ষে, এই গবেষণা হতে বোঝা যায়, ভবিষ্যতের পৃথিবী আরো বেশী অনিশ্চিত হবে এবং ঘটনাবলীর পূর্বনির্ধারণ কঠিন হয়ে পড়বে। পূর্ববর্তী অনুমান অনুযায়ী দেখা যায়, প্রতি শতাব্দীতে আমাদের দিনের দৈর্ঘ্য ২.৩ মিলিসেকেন্ড করে বাড়ছে। তাই এই পৃথিবী গ্রহটি প্রকৃত পক্ষে আগের ধারনার চেয়ে ভিন্ন হারে ধীর হয়ে যাচ্ছে।
পৃথিবীর বিভিন্ন ঘটনাবলীর প্রাক্তন রেকর্ডসমূহ ঘেঁটে এটি ধীর হওয়ার সময় গণনা করা হয়। একেবারে প্রাথমিক দিকের দলিলের মধ্যে রয়েছে ব্যবিলনের টেরাকোটা ইত্যাদি। সেই সাথে গবেষকদল প্রাচীন গ্রীক লিপি, চীন হতে প্রাপ্ত লেখা, মধ্যযুগীও ইউরোপ হতে প্রাপ্ত দলিল ইত্যাদি পর্যালোচনা করেছেন। এসব প্রাচীন দলিলে সুর্যগ্রহণ ও অন্যান্য জোর্তির্বিদ্যা সম্পর্কিত ঘটনা লিপিবদ্ধ করা আছে। এসব ঘটনার লিপিবদ্ধ সময়ের সাথে বর্তমান গণনার সময় তুলনা করে, তখনকার পৃথিবীতে দিনের দৈর্ঘ্য এবং বর্তমান দিনের দৈর্ঘ্যের পার্থক্য কম্পিউটারে গণনা করে বের করা যায়। এইভাবে গণনা করে ভবিষ্যতের নানাবিধ ঘটনা ঘটনার সময়ও অনুমান করা যায়। [Science Alert অবলম্বনে]
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক