বিজ্ঞান পত্রিকা

বিশ্বের বৃহত্তম উড়োজাহাজ পুননির্মানের উদ্যোগ নিল চীন

পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ উড়োজাহাজের নাম অ্যান্টনভ এএন-২২৫ মৃয়া। ইউক্রেনের বিখ্যাত নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যান্টনভ কর্পোরেশন ১৯৮৮ সালে এটি নির্মান করে। ৮০র দশকে বিশ্বব্যাপী স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই এর নকশা তৈরি করা হয়। নির্মানের পরই বিশাল আকারের জন্য এটি সকলের নজরে চলে আসে। এমনকি বর্তমান সময়েও এর প্রতি মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। তবে খুব শীঘ্রই এর জনপ্রিয়তার জোয়ারে ভাটা পড়তে যাচ্ছে। কারণ চীনের সরকার এই উড়োজাহাজের আদলে তৈরি নতুন আরেকটি প্লেন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্লেনটিরও প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যান্টনভ কর্পোরেশন।

সম্প্রতি অ্যান্টনভ  চীনের বিমান শিল্প কর্পোরেশনের সাথে এই বিষয়ে একটি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। চুক্তিতে চীন এই বিমান নতুন করে তৈরির কথা উল্লেখ করেছে। প্রকল্পের শুরুতে অ্যান্টনভ কর্পোরেশন কিয়েভে বিমানটির নতুন আরেকটি মডেল তৈরি করবে ও ২০২১ সালের মধ্যে তা চীনের কাছে হস্তান্তর করবে। এএন-২২৫ তৈরির পর এটাই হবে বিমান শিল্পের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় নির্মান প্রকল্প। তবে প্রকল্পটি অনেক ব্যয়বহুল। রয়টার্সের বিবৃতি অনুসারে, এই বিশালদেহী বিমানটি তৈরিতে চীন প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার ডলার খরচ করছে।

অ্যান্টনভের চীন প্রকল্পের সমন্বয়ক গ্যানাডি গ্যাব্রুক এএফপিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, নতুন বিমানটি পূর্বে তৈরিকৃত বিমান এএন-২২৫ এর নির্মান কাঠামোর উপর ভিত্তি করেই তৈরি করা হবে। তবে এতে আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হবে এবং এর সমস্ত নির্মান উপকরণ হবে নতুন। আশির দশকে যখন এএন-২২৫ এর ডিজাইন করা হয়, তখন এর ওজন ধরা হয়েছিল ১৫৮ টন। এটি তখন রাশিয়ার মহাকাশযান সংস্থার বিভিন্ন রকেট ও মহাশূন্যযান আকাশপথে বহনের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়। উড়োজাহাজটি ৮৪ মিটার (২৭৫ ফুট) দীর্ঘ। বিমানটির পাখা দুইটির প্রসারতার দৈর্ঘ্য ৮৮ মিটার (২৮৯ ফুট)। এতে ৬টি টার্বোইঞ্জিন ফ্যান রয়েছে।

বিশালাকৃতির এই উড়োজাহাজটি ১৯৮৮ সালের ২১ ডিসেম্বর সর্বপ্রথম আকাশের বুকে পাখা মেলে উড়াল দিয়েছিল। কিন্তু একে মূলত জাহাজের বিভিন্ন মালামাল আকাশপথে পরিবহনের জন্য একটি ভাড়া করা যানবাহন হিসেবেই এতদিন ব্যবহার করা হয়েছে। তবে চীন এই বিমানের নতুন সংস্করণ দিয়ে কি করবে ও তারা এই ধরনের কয়টি বিমান ক্রয় করবে,এই বিষয়ে চীন সরকারের পক্ষ থেকে কিছুই বলা হয়নি। তবে একে বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। বাণিজ্যিক,সামরিক ও মহাশূন্যযানের বিভিন্ন পণ্য বহন ও পরিবহনে একে অনায়াসে ব্যবহার করা যেতে পারে। অবশ্য এএন-২২৫ মৃয়াকে এই ধরনের কাজে একবার ব্যবহার করা হয়েছিল। উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় বিমানটি ২,১৬,০০০ মার্কিন সেনার খাবার পারস্য উপসাগরে  সফলভাবে পৌছে দিয়েছিল।

তাই এএন-২২৫ মৃয়ার নতুন প্রজন্মকে চীন কিভাবে কাজে লাগায়, এটাই এখন দেখার বিষয়।

-নাসরুল্লাহ্ মাসুদ

Exit mobile version