বিজ্ঞান পত্রিকা

হাতির পায়ের ছাপ জলজ প্রানীর আবাসস্থল

যখন দশ-টনী একটি আফ্রিকান হাতি বনভূমির উপর দিয়ে হেঁটে যায় তখন পায়ের পাতা দিয়ে গভীর খাদের সৃষ্টি করে। এসব প্রকান্ড পায়ের ছাপে ক্রমান্বয়ে পানি জমে নানাবিধ জলজ অমেরুদন্ডী প্রানীর আবাসস্থলের সূচিত করে। সম্প্রতি African Journal of Ecology তে প্রকাশিত একটি গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।

হাতিকে বাস্তুতন্ত্র প্রকৌশলী হিসেবে ধরা হয়। তারা বনে উন্মুক্ত ভূমি তৈরি করে, নদীর তীরকে উপচে পড়ার হাত থেকে বাঁচায়, গাছের বীজ ছড়িয়ে বংশ বিস্তারে সাহায্য করে এবং গোবরের মাধ্যমে সার প্রদান করে।

উগান্ডায় অবস্থিত কিবেল ন্যাশনাল পার্কের একটি মাঠ পর্যায়ের গবেষনায় গবেষক উলফার্ম এবং তাঁর দল পানিপূর্ণ হাতির বড় বড় পায়ের ছাপ পর্যবেক্ষণ করেন। তাঁর চমৎকৃত হয়ে দেখেন হাতি স্রেফ মাটির উপর দিয়ে হেঁটে গিয়ে নতুন নতুন বাসস্থান তৈরি করছে।

৩০ ফুট আকারের এই জন্তুগুলোর পায়ের ছাপগুলোর উপর চোখ বুলিয়ে গবেষকগণ দেখতে পান জলীয় গুবরে ও মাকড়সাসহ এই ক্ষুদে পুকুরগুলোতে প্রায় ৬০ ধরনের প্রজাতির বাস। ব্যাঙ্গাচি আর ফড়িংএর লার্ভাও পাওয়া যায় এতে, তবে এরা অপেক্ষাকৃত পুরোনো ছাপ পছন্দ করে। গাছের ঝরে যাওয়া পাতা পুরোনো ছাপগুলোকে কিছু প্রানীর কাছে বেশী আকর্ষনীয় করে তোলে কেননা এই ছাপগুলোতে এরা ডিম পেড়ে তা ঢেকে রাখতে পারে।

এই পর্যবেক্ষন হতে ধারনা পাওয়া যায় পায়ের ছাপের বয়সের সাথে  বিদ্যমান প্রজাতির প্রকরণ সম্পর্কযুক্ত এবং ছাপটি যত পুরোনো হতে থাকে ততোই এতে বসবাসকারী প্রজাতিগুলো প্রতিস্থাপিত হতে থাকে। উলফারম রেমার্স বলেন, “এটা খুবই চমৎকার এবং আমার জন্য বিষ্ময়কর যে একেকটা পায়ের ছাপ এতবিপুল পরিমান এবং ঘন সন্নিবেশিত অমেরুদন্ডী প্রজাতির আবাসস্থল। এই বাসস্থান কয়েক বছর ধরে বিদ্যমান থাকে এবং সময়ের সাথে বিভিন্ন দশার মধ্য দিয়ে যায়।”

Exit mobile version