পদার্থবিদ্যার মহলে নতুন একটি তত্ত্ব উঁকি-ঝুঁকি দিচ্ছে এবং এই মূহুর্তে এটিকে পদার্থবিদ্যার সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর একটির সমাধান হিসেবে ভাবা হচ্ছে। তত্ত্বটি আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব ও কোয়ান্টাম বলবিদ্যার মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করবে, যদি সত্য হয়। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লিওনার্দ সাসকিন্ড এই তত্ত্বটি একটি গবেষনাপত্রে তুলে ধরেছেন, তবে এটি এখনো প্রকাশিত হয় নি, তার আগের পর্যালোচনা চলছে।
সাসকিন্ড সাধারণ আপেক্ষিকতা এবং কোয়ান্টাম বলবিদ্যার মধ্যে সমন্বয় তৈরির জন্য একটু নতুন ‘আপাত সমীকরণ’ প্রস্তাব করেছেন, ER = EPR। এই সমীকরণের বামপাশের আংশ ১৯৩৫ সালে প্রকাশিত আইনস্টাইন এবং ন্যাথান রোজেন-এর ওয়ার্মহোল সংক্রান্ত একটি গবেষনাপত্র নির্দেশ করে; আর ডানপাশ, আইনস্টাইন, রোসেন এবং বোরিস পোডলস্কি-র একই বছরে প্রকাশিত কোয়ান্টাম এন্টেঙ্গেলমেন্ট সূচিত করে।
এই নতুন গবেষণাপত্রটি সাসকিন্ড তাঁর ২০১৩ সালে প্রিন্সটনের Institute of Advanced Studies এর হুয়ান ম্যাল্ডাসেনার সাথে প্রকাশিত একটি প্রস্তাবনার উপর ভিত্তি করে নির্মিত।এই দুটি ধারনা একই রকম; এতে ব্ল্যাকহোল জাতীয় বস্তুর সাথে ওয়ার্মহোলের সাথে একত্রিত করে একটি সম্পর্ক প্রকাশ করা হয়।
কোয়ান্টাম এন্টেঙ্গেলমেন্ট কণাসমূহের মধ্যে এক অদ্ভুত আচরণ যেখানে তারা পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং একই কোয়ান্টাম দশায় অবস্থিত থাকতে পারে, কণাগুলো যতো দুরেই অবস্থান করুন না কেন। একটি কণা যদি তার দশা পরিবর্তন করে তাহলে দুর-দুরান্তে অবস্থিত অপর কণাটিও করবে, যা চীন সম্প্রতি তাদের নতুন কোয়ান্টাম কমিউনিকেশন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখতে যাচ্ছে।
সমীকরণের অন্য অংশ ER, মহাবিশ্বে দুটি অবস্থানকে কেমন করে ওয়ার্মহোলর মাধ্যমে যুক্ত করা যায় সেই বিষয়ে ধারনা দেয়। ওয়ার্মহোলের মাধ্যমে যুক্ত এই দুটি অবস্থানের একটি থেকে নিমেষেই অপরটিকে চলে যাওয়া যাবে।
সাসকিন্ডের মতে, শুধু কণিকাসমুহের মধ্যেই কোয়ান্টাম এন্টেঙ্গেলমেন্ট তৈরি করা যায়, তা নয়। তিনি প্রস্তাব করেন, ব্ল্যাকহোলের মতো দৈত্যাকার বস্তুও বিশাল দুরত্ব অবস্থান করে বিভিন্ন প্রকাশ বৈশিষ্ট্য আদান-প্রদান করতে পারে এবং এই পরিস্থিতিতে তারা কোনো এক ধরনের কোয়ান্টাম ওয়ার্মহোলের মাধ্যমে যুক্ত থাকে। এসবের সমন্বয় সাধন করে তিনি মনে করেন কোয়ান্টাম বলবিদ্যা এবং মহাকর্ষ আমরা যতটা ভাবি তার চেয়ে বেশি সম্পর্কযুক্ত।
⚫ বিজ্ঞানপত্রিকা ডেস্ক