বিজ্ঞান পত্রিকা

শনির গ্রহ টাইটানে সাবমেরিন পাঠাচ্ছে নাসা

আমাদের উষ্ণ গ্রহ পৃথিবীতে মিথেন, ইথেন এসব গ্যাস হলেও শনির উপগ্রহ টাইটানের নিন্মতাপমাত্রায় এরা তরল অবস্থায় থাকে এবং যথেষ্ট পরিমান তরল জমা হলে তাতে একই গ্রহ বা উপগ্রহে সমুদ্রও তৈরি হয়। শনির সর্ববৃহৎ উপগ্রহটিতে রয়েছে মিথেন, ইথেনের সাগর, নদী, হ্রদ। তাই টাইটানকে উদ্ঘাটন করতে হলে একটি সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজ হলেই ভালো হয়।

সম্প্রতি নাসা এধরনেরই একটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই রোবটিক সাবমেরিন টাইটানের উত্তরে অবস্থিত সর্ববৃহৎ সমুদ্র ক্রাকেন মারে’তে নিমজ্জিত করা হবে। এই মহাজাগতিক সমুদ্রটি প্রায় ৬০০ মাইল (১০০০ কিলোমিটার) প্রশস্ত এবং এবং ৩০০ মিটার গভীর।

এই মিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, সাবমেরিনে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি সমুদ্রবর্তী বিভিন্ন বস্তুর অনুপুঙ্খ বর্ণালী বিশ্লেষণ করে যথাযথ তথ্য সংগ্রহ করবে। এটি সমুদ্রের রাসায়নিক কম্পোজিশন হিসেব করবে, পৃষ্ঠ ও তলদেশীয় স্রোত পরিমাপ করবে এবং এর তলদেশের কাঠামো নির্ধারণ করবে। ২০১৫ সালে আয়োজিত নাসার Innovative Advanced Concepts সম্মেলনে এই পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
অন্যান্য গ্রহে প্রেরিত রোভার জাতীয় যানের পরিবর্তে সাবমেরিন টাইটানের পরিবেশে আরো দক্ষতার সাথে কাজ করবে বলে ধারনা করা হয়। এই ধরনের একটি যন্ত্র আনেক বড় ব্যপ্তি কাজ করতে পারবে যা পৃথিবীতে বিচরণকারী সাবমেরিনগুলোর সাথে তুলনীয়। ২০০৪ সাল থেকে টাইটানের মিথেন ও ইথেনের সমুদ্রগুলোর মানচিত্র নাসার পাঠানো ক্যাসিনি প্রোবের মাধ্যমে যথাযথভাবে তৈরি করা হয়েছে। শনির পাশাপাশি ক্যাসিনি টাইটানের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যও বিশ্লেষণ করেছে। ২০০৫ সালে ক্যাসিনির সাথে প্রেরিত হাইগেন প্রোবকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে টাইটানের পৃষ্ঠে যা প্রথমবারের মতো টাইটানের মত অদ্ভুত নতুন দুনিয়ার ছবি তুলে পাঠিয়েছে।

কিন্তু টাইটানের সমুদ্রগুলোর গভীরে কি আছে তা রহস্যই রয়ে গেছে এতদিন। একটি সাবমেরিনই এই রহস্যের যথাযথ উদ্ঘাটন করতে পারে এই ভাবনা থেকেই সাবমেরিন পাঠানো হচ্ছে টাইটানে।

Exit mobile version