পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ন একটি দেশ হলো আমাদের বাংলাদেশ। ভৌগলিক ভাবে বিশাল রাশিয়ার তুলানায়ও এদেশের জনসংখ্যার পরিমান অনেক বেশী। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি ৯০ লাখ। ২০০০ সালে ১৩ কোটি এবং বর্তমানে প্রায় ১৬ কোটিতে এসে দাড়িয়েছে। বর্তমানে যে হারে আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য যথেষ্ট হবে না বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। ঢাকা শহরে প্রতি বছর হাজার হাজার লোক জীবনের তাগিদে এসে হাজির হচ্ছে। এসে দেখে তাদের জন্যে কোন বাসস্হান নেই, নেই কোন পানি কিংবা পয়ঃনিষ্কাসন ব্যবস্হা। ১৯৫০ সালের ঢাকা শহরের তুলনায় আজকের ঢাকা শহর প্রায় ৪০ গুন বড়।এখনই শহরের বস্তিগুলো গিজগিজ করছে চরম দরিদ্র মানুষজনে যারা কিনা এর চেয়েও বেশি দারিদ্রতার হাত থেকে বাঁচার জন্যে শহরে এসে উপস্হিত হয়েছে। ২০৫০ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা হবে ২২ কোটি এবং দেশের দক্ষিনাঞ্চলের একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অংশ চিরদিনের জন্য পানির নিচে তলিয়ে যেতে পারে। আর তা যদি ঘটে তবে দক্ষিনাঞ্চলের ১ থেকে ৩ কোটি মানুষ বাস্তুহারা হয়ে দেশের বড় বড় শহরগুলোসহ পার্শবর্তী দেশগুলোতে জলবায়ু শরনার্থী হিসাবে আশ্রয় নিতে পারে।বাংলাদেশ পিস এন্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল মুনিরুজ্জামানের মতে, এ ধরণের গন অভিবাসন সৃষ্টি করতে পারে দীর্ঘমেয়াদী খাদ্য এবং পানির অভাব, রোগ-ব্যাধি, মহামারী, ধর্মীয় সংঘাত, এমন কি ইন্ডিয়া পাকিস্হানের মধ্যে পারমানবিক যুদ্ধের মত উত্তেজনাকর পরিস্হিতি।
১৭৯৮ সালে ইংরেজ অর্থনীতিবিদ এবং জনসংখ্যাতাত্বিক থমাস ম্যালথাস তার বিখ্যাত বই An Essay on the Principle of Population প্রকাশ করেন যেখানে তিনি বলেন জনসংখ্যা বৃদ্ধি একসময় খাদ্যশস্য উৎপাদনের হারকে ছাড়িয়ে যাবে। এর যুক্তি হিসাবে তিনি বলেন জনসংখ্যার বৃদ্ধি ঘটে থাকে Exponentially আর খাদ্য উৎপাদনের হার বাড়ে Arithmetically. ফলশ্রুতিতে জনসংখ্যার বৃদ্ধি এমন এক পর্যায়ে পৌছে যাবে যে তখন তারা সমস্ত খাদ্য শেষ করে ফেলবে এবং কোন উদ্ধৃত্ত থাকবে না যদি জনসংখ্যার বৃদ্ধি দুর্ভিক্ষ, মহামারী, যুদ্ধ কিংবা অন্য কোন উপায়ে রোধ না করা হয়। ম্যালথাসের তত্বের পক্ষের এবং বিপক্ষের সবাই একটা জিনিষ অন্ততঃ মেনে নিয়েছেন যা হলো জনসংখ্যার চাপ এবং অ-পূরণযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের ফলে সৃষ্ঠ পরিবেশগত সমস্যার সমাধান যদি আমরা আমাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সমাধান করতে না পারি তবে তা আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এবং অপ্রিয় উপায়ে হলেও নিজে নিজেই সমাধান হয়ে যাবে, যেমনটি ম্যালথাস বলেছেন সেভাবে। পরিবেশগত সমস্যা প্রায়ই মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সৃষ্টি করে যা বর্তমানে আমাদের দেশে কোর্ট কিংবা গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে মীমাংসিত হয়, আবার কখনও কখনও তা হানহানিতে রুপান্তরিত হয়। জ্যারেড ডায়ামন্ড তার Collapse বইতে দেখিয়েছেন ৯৪ সালের রুয়ান্ডার গনহত্যা শুধুমাত্র হুটু এবং টুটসিদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ঘৃণার বহিঃপ্রকাশই ছিলো না, এর সাথে আরও অনেকগুলো কারন জড়িত ছিলো, যেমন অতিরিক্ত জনসংখ্যা এবং ভূমির স্বল্পতা । অসংখ্য কৃষক পরিবার একটি নির্দিষ্ট পরিমান ভূমিকে ক্রমাগতভাবে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করতে করতে এমন একটি পর্যায়ে চলে গিয়েছিলো যা কিনা আর একটি কৃষক পরিবারের ঠিকে থাকার পক্ষে যথেস্ঠ ছিলো না। ডায়ামন্ড তার বইতে দেখিয়েছেন ম্যালথাসের তত্বের সবচাইতে খারাপ অবস্হা কিভাবে বাস্তবে পরিনত হতে পারে।
তবে একটা কথা বলে রাখা প্রয়োজন যে একমাত্র পরিবেশ বা জনসংখ্যার কারণেই কোন দেশ বা সভ্যতা অতীতে ব্যর্থ হয়েছে এমন কোন উদাহরণ জানা নেই। সবসময়ই এর সাথে অন্যান্য আরও কিছু কারণ জড়িত থাকে। জ্যারেড ডায়ামন্ডের মতে একটি দেশ বা সভ্যতার ব্যর্থ হওয়ার পেছেনে ৫টি কারন কাজ করতে পারে। এই পাঁচটি কারণের মধ্যে ৪টি কারণই কোন একটি দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ন হতেও পারে আবার নাও হতে পারে। কারনগুলো হলোঃ পরিবেশের ক্ষতিসাধন, জলবায়ুর পরিবর্তন, প্রতিবেশী হিসাবে শত্রু দেশের অবস্হান, বাণিজ্য সহায়ক প্রতিবেশী বন্ধু দেশ। তবে পঞ্চম কারণটি প্রতিটি দেশের জন্যে অতি অবশ্যই খুবই গুরত্বপূর্ন একটি কারণ আর সেটি হলোঃ একটি দেশ তার পরিবেশের সমস্যা সমাধানে যে পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করে থাকে সেগুলো।
১) পরিবেশের ক্ষতিসাধন:মানুষ যখন অনিচ্ছাইচ্ছাকৃত পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলে থাকে। অতীতের সভ্যতাগুলো (যেমন ইস্টার আইল্যান্ড, পিটকেয়ার্নস এবং হেন্ডারসন আইল্যান্ড, আনাসাজি, মায়া, ভাইকিংস, গ্রীণল্যান্ডের নরস্, রুয়ান্ডা, হাইতি ইত্যাদি) যেভাবে পরিবেশের ক্ষতিসাধন করে নিজেদের বিপদ ডেকে এনেছিলো সেগুলোকে মোটামুটি ৮টি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। এই প্রক্রিয়াগুলোর সবগুলোর প্রভাবই যে সবার ক্ষেত্রে সমান গুরুত্বপূর্ন ছিলো তা অবশ্যই নয়। এগুলো হলোঃ বন উজাড় করা এবং প্রাণিদের আবাসভূমি নষ্ট করা; ভূমির ক্ষয়, লবনাক্ততা বৃদ্ধি, উর্বরতা কমে যাওয়া; পানির অব্যবস্হাপনা; অতিরিক্ত পশু-পাখি শিকার; অতিরিক্ত মৎস শিকার; স্হানীয় পশু, পাখী, উদ্ভিদ প্রজাতির উপর বাইরে থেকে আনা প্রজাতির বিরুপ প্রভাব; জনসংখ্যা বৃদ্ধি; এবং প্রকৃতির উপর মাথা পিছু মানুষের গড় প্রভাব বেড়ে যাওয়া।
বর্তমান সময়ে আমরা যে সমস্ত পরিবেশঘটিত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি সেগুলো উপরেল্লিখিত ৮টি সমস্যার সাথে আরও ৪টি নতুন সমস্যার সমাহার। এগুলো হলো মানব সৃষ্ঠ জলবায়ু পরিবর্তন, পরিবেশে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের জমা হওয়া, জ্বালানী শক্তির সংকট এবং পৃথিবীর সালোকসংশ্লেষন ক্ষমতার পূর্ন ব্যবহার।
এই ১২ টি সমস্যার বেশির ভাগই আগামী কয়েক দশকে আমাদের জন্য বাস্তবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দেবে। সমস্যাগুলোর সমাধান না করলে তার পরিনতি ভয়াবহ হতে পারে তা বলাই বাহুল্য। সমস্যাগুলো মহামারী কিংবা যুদ্ধের মত অবস্থাতেও রুপ নিতে পারে। এগুলো সমাধানের জন্য আমরা যে পদক্ষেপই গ্রহন করি না কেন তা নির্ধারণ করবে পরবর্তী জেনারেশনের শিশু এবং তরুণরা কোন ধরনের বাংলাদেশে বসবাস করবে। আমরা কি পারব আধুনিক প্রযুক্তি দ্বারা এই সমস্যার সমাধান করতে নাকি এই সমস্ত প্রযুক্তিই সৃষ্টি করবে আরও ভয়াবহ সব সমস্যার।
২) জলবায়ু পরিবর্তনঃ সাধারনত আমরা এই টার্মটা দ্বারা মানব সৃষ্ঠ জলবায়ু সমস্যার কথা বুঝি। কিন্তু স্বাভাবিক উপায়েও জলবায়ু পরিবর্তন সাধিত হতে পারে এবং হয়ে থাকে। নিচে এসম্বন্ধে আলোচনা রইল:
জনসংখ্যার চাপ: বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২০৫০ সালে খুব বেশি আশাব্যঞ্জক হলেও ১.৩৫ হতে পারে। তা সত্ত্বেও জনসংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে আজকের থেকে আরও ২.৫ কোটি বেশি। পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ লোক সমুদ্র তীর থেকে ৬২ মাইলের মধ্যে থাকে। আগামী কয়েক দশকে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে নিউইয়র্ক এবং মায়ামির সাথে সাথে পৃথিবীর বড় বড় শহরগুলি উপকূলীয় বন্যার কারণে অসহায় হয়ে পরবে। ১৩৬টি বন্দর নগরীর উপর চালানো এক সমীক্ষায় দেখা গেছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর, বিশেষ করে এশিয়ার শহরগুলি সবচাইতে বেশী ঝুকির সম্মুখীন হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর যে দুটি শহরের জনসংখ্যা আনুপাতিক হারে সবচাইতে বেশী বৃদ্ধি পাবে সে দুটি শহর হলো ঢাকা এবং চট্টগ্রাম। খুলনাও খুব একটা পিছিয়ে থাকবে না। যদিও আমাদের এই বদ্বীপ অঞ্চলের কিছু অংশ নদীবাহিত পলির কারণে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতার সাথে তাল মিলিয়ে উঁচু হতে থাকবে তবে এক পঞ্চমাংশ অংশ তলিয়ে যাবে পানির নীচে।
গন অভিবাসন: ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপের সাথে সাথে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা কয়েক ফুট বেড়ে গেলে ১০ থেকে ৩০ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পরবে। জলবায়ু শরনার্থী হিসাবে এই বাস্তুহারা মানুষগুলো মূলতঃ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনার মত বড় শহরগুলো ছড়িয়ে পরার সাথে সাথে প্রচন্ড চাপ ফেলবে দেশের সরকার, এর বিভিন্ন গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, এবং সীমান্ত এলাকা গুলোতে। গনহারে অভিবাসনের মত একটি ভূ-রাজনৈতিক ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা খুবই প্রবল। এ অবস্হায় লক্ষ লক্ষ লোক যদি ভারত, বার্মা কিংবা পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় আশ্রয় নেয়ার আশায় রওনা দেয় তবে শুরু হতে পারে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের একটি সমস্যা। পাশাপাশি শুরু হতে পারে মহামারী, দুর্ভিক্ষ, ধর্মীয় সংঘাত, ব্যপক খাদ্য এবং পানির সংকট।
বন্যা এবং খরা: তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে হিমালয়ের হিমবাহের বরফগলা পানি সাধারণতঃ নদ-নদীগুলোর বাৎসরিক পানি প্রবাহের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়ার সাথে সাথে ভুমিধ্বস, ফ্লাশ ফ্লাড, এবং পাহাড়ী হ্রদগুলোর উপচে পড়ারও কারণ ঘটিয়ে থাকে। তাই হিমালয়ের বরফ গলে প্রতিবছরই বাংলাদেশে মৌসুমি বন্যা হয়ে থাকে। এই মৌসুমী বন্যাগুলো দিনকে দিন আরও বেশী ভয়াবহ রুপ ধারন করছে। অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে উত্তারাঞ্চল পরে যায় খরার কবল। হিমালয়ের বরফ গলে শেষ হয়ে গেলে বাংলাদেশের বিস্তীর্ন এলাকা পরিনত হবে অনাবাদী এক মরুভুমিতে। তবে আশার কথা এই যে IPCC সম্প্রতি তাদের পূর্বের দেয়া রিপোর্ট সংশোধন করে নতুন করে বলছে যে হিমালয়ের বরফ ২২৫০ সালের আগে গলে শেষ হবে না। আপাততঃ যাকে আমাদের জন্য মন্দের ভালো হিসাবে গন্য করা যায়।
খাদ্য স্বল্পতা: সংবাদ সংস্থা এএফপি এপ্রিল, ২০০৮ -এর প্রথম সপ্তাহে জানিয়েছে- বিশ্বে ৩৩টিরও বেশি দেশে তীব্র খাদ্য সংকট চলছে, যার ফলে বিরাজ করছে গণ-অসন্তোষ। বিশ্বের ৩৩টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশও আছে। খাদ্যের স্বল্পতা বৈশ্বিক সভ্যতা ভেঙে পরার কারণ হয়ে দাড়াতে পারে। মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদের উপর ভর করে বেঁচে আছে। মাটির উর্বরতা কমে যাওয়া, ফসলী জমি পানিতে ডুবে যাওয়া কিংবা ভূ-গর্ভস্হ পানির পরিমান কমে যাওয়া — এই সব কিছুই খাদ্য উৎপাদনের উপর ব্যপক প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি শিল্পকারখানা আর বসতবাড়ি নির্মাণে গ্রাস করছে আবাদি জমি। প্রতিদিন দেশে প্রায় ৩২০ হেক্টর কৃষি জমি চলে যাচ্ছে অ-কৃষি কর্মকাণ্ডে। যাতে করে ১৫ লক্ষ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা হারাচ্ছে। ফসলি জমিতে মাটি ভরাট করে গড়ে উঠছে ঘরবাড়ি ও শিল্পকারখানা । বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির ফলে ফসল উৎপাদন ব্যবস্থা প্রশংসার দাবীদার হলেও ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে প্রায় ১ কোটি লোক দিনে তিনবেলা খেতে পারে না। তারা নীরব দুর্ভিক্ষের শিকার। আজ থেকে ৩০ বছর পরে এই অবস্হা কতটা ভয়াবহ আকার ধারন করবে তা হয়ত আমরা কল্পনাও করতে পারছি না।
কৃষি জমির অকৃষি খাতে রুপান্তর: বিবিএস (বাংলাদেশ পরিসংখ্যান অধিদফতর) -এর উপাত্ত অনুযায়ী বাংলাদেশে ৪৫% পরিবার ভূমিহীন। ভূমি জরিপ বিভাগের তথ্য মতে ১৯৭১ সালে আমাদের আবাদি জমির পরিমাণ ছিল ২ কোটি ১৭ লাখ হেক্টর। যা ১৯৮৬ সালে এসে দাঁড়ায় মাত্র ৮১ লাখ ৫৮ হাজার হেক্টরে এবং ২০০৩ সালে কমে দাঁড়ায় ৭০ লাখ ৮৭ হাজার হেক্টরে। রাস্তাঘাট, আবাসন ও শিল্পকারখানার ফলে কৃষি জমি দিন দিন অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। এতে বন্যার পানি নিষ্কাশনের পথে অন্তরায় সৃষ্টি হচ্ছে। ফসলি জমি জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছে। এতে ভূমিক্ষয় বৃদ্ধি পাচ্ছে, জমির উর্বরা শক্তি কমার এবং রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার বেড়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। সব মিলিয়ে কৃষি জমি কমে চলেছে এবং অবশিষ্ট জমির উপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বাভাবিকভাবেই। ইট ভাটার সংখ্যা বাড়ছে এবং সে কারণেও নষ্ট হচ্ছে আবাদি জমি। ইট ভাটার জন্য সাধারণত ব্যবহার করা হয় আবাদি জমির উপরের উর্বর মাটি। যে মাটি কৃষি আবাদের জন্য খুবই উপযোগী। একবার আবাদি জমির উপরের মাটি কেটে নিয়ে গেলে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগে তা আগের অবস্থায় ফিরে আসতে। এর ফলে উৎপাদন হয় ব্যাহত। নদী ভাঙ্গনেও কৃষক হারাচ্ছে আবাদি জমি। কলকারখানার দুষিত বর্জ্যরে কারণে কারখানা-সংলগ্ন আবাদি জমির উর্বরা শক্তি ও ফসল উৎপাদন ব্যবস্থা হ্রাস পাচ্ছে। কৃষক বাধ্য হয়ে তার জমি অন্যের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। সেখানে আবারও গড়ে উঠছে কলকারখানা।
ভূমিকম্প: যদিও ভূমিকম্পকে হয়ত সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সংযুক্ত করা যায় না তবে ভবিষ্যতের ২২ কোটি মানুষের আয়তনে ছোট হয়ে যাওয়া বাংলাদেশে একটা মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পও ব্যপক ক্ষতি সাধন করার ক্ষমতা রাখে। বাংলাদেশে প্রতিবছরই ৪ থেকে ৫ মাত্রার বেশ কিছু ভুমিকম্প নিয়মিত অনূভূত হয়। ইন্ডিয়ান প্লেট এবং ইউরেশিয়া প্লেট বাংলাদেশ থেকে বেশ দূরে দিয়ে গেছে তবুও ঐ অঞ্চলে একটা ৮/৯ মাত্রার ভুমিকম্প বাংলাদেশে আসতে আসতে পলিমাটির গঠনের কারণে হয়ত ৫-৬ এ গিয়ে দাড়াবে তারপরও সেটা কল্পনাতীত ঘনবসতিপূর্ন ঢাকা শহরে ব্যপক ক্ষতি করতে সক্ষম হবে। আর বঙ্গোপসাগরের নিচে যে ফল্ট লাইন আছে সেখানে ভুমিকম্প হলে তো সুনামীর আশংকা আছেই। বাংলাদেশ এবং আশেপাশের এলাকাতেও বেশ কিছু ফল্ট জোন আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বগুড়া ফল্ট জোন, ত্রিপুরা ফল্ট জোন, সাব-ডাউকি ফল্ট জোন, শিলং ফল্ট জোন, আসাম ফল্ট জোন, সিলেট ফল্ট এবং কোপিলি ফল্ট।ইতিহাস থেকে আমরা জানি এই ফল্টগুলাতেও ৭ থেকে ৮.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে যা হয়ত বাংলাদেশে আঘাত হানার আগে দুর্বল হয়ে পরলেও যথেষ্ঠ ক্ষতির কারণ হতে পারে।
রোগ-ব্যাধি এবং মহামারী:জলবায়ুর পরিবর্তন জলবায়ুর সাথে সংবেদনশীল রোগ-ব্যাধির ছড়াতেও প্রভাব রাখবে। এরকম একটি রোগ হলো ম্যালেরিয়া। উষ্ন এবং বর্ষণসিক্ত আবহাওয়াই ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। গত ৩০ বছরে ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এটা এখন বাংলাদেশে একটা প্রধান স্বাস্হ্য সম্পর্কিত সমস্যা। প্রায় ১.৫ কোটি মানুষ বর্তমানেই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হাই রিস্কে আছে। অন্যান্য রোগের মধ্যে ডিসেন্ট্রি, ডায়রিয়া, হিট স্ট্রেস থেকে হাইপার টেনশন, এ্যাজমা, এবং বিভিন্ন রকমের চর্মরোগের সম্ভাবনাও অনেক বেড়ে যাচ্ছে বলে গবেষকরা মত দিচ্ছেন। এর পাশাপাশি বার্ড ফ্লু এবং সোয়াইন ফ্লু সহ অন্যান্য নতুন ধরনের ভাইরাস প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন অবস্হায় ভয়াবহ ধরনের মহামারী সৃষ্টি করতে পারে। জেনেভায় বিশ্ব স্বস্হ্য সন্মেলনে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭ই মে, ২০১১, সোয়াইন ফ্লু এবং এভিয়ান ফ্লুর মত রোগ প্রতিরোধে উন্নয়নে সহায়তা কারী দেশের প্রতি সাহায্যের আহবান জানিয়েছেন।
৩) প্রতিবেশী হিসাবে শত্রু দেশের অবস্হানঃ বর্তমানে এইকারনটি আর শুধু প্রতিবেশীতেই সীমাবদ্ধ নেই। পরিবেশজনিত কারণে বা অন্য কারনে যখন একটা দেশ দুর্বল হয়ে পরে তখন সাধারনত শক্তিশালী দেশটি সামরিক অভিযানের মাধ্যমে অন্য দেশটির ভেঙে পরার কারন হয়ে দাড়ায়। আমাদের জন্যে আপাততঃ এটি চিন্তার কারন নয়।
৪) বাণিজ্য সহায়ক প্রতিবেশী বন্ধু দে্শঃ এটা হলো ৩ নম্বরের বিপরীত। তবে অনেক ক্ষেত্রেই শত্রু এবং বন্ধু উভয়ই একই হতে পারে। শত্রুতা এবং বন্ধুতা ক্রমাগতই পরিবর্তন হয়ে থাকে। বেশীর ভাগ দেশই প্রতিবেশী দেশটির উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল হয়। বিশেষ করে ছোট দেশগুলি বড় দেশটি থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রবাদি আমদানী করে অথবা তাদের যে সাংস্কৃতিক বন্ধনটা থাকে তা তাদেরকে মিলেমিশে থাকতে সাহায্য করে। ফলে প্রতিবেশী দেশটি যদি নিজেই কোনকারণে দুর্বল হয়ে পরে এবং প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ করতে না পারে বা কোন কারনে সাংস্কৃতিক বন্ধন দুর্বল হয়ে পরে তবে নির্ভরশীল দেশটিও ক্ষতিগ্রস্হ হতে পারে। অন্যদিকে বন্ধুদেশটি যদি হঠাৎ করে সাহায্য করা বন্ধ করে তাহলেও দেশটি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ডন বেল্ট আমাদের জানাচ্ছেন ভারত বাংলাদেশের সীমান্তে বরাবর ২৫০০ মাইল দীর্ঘ কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে তাদের দেশে জলবায়ূ শরনার্থী প্রবেশের পথ বন্ধ করছে। আর এরই পূর্ব পরিকল্পনা হিসাবে প্রতিদিন সীমান্তে গুলি করে মানুষ মারছে যাতে করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং বাংলাদশের মানুষের কাছে একটা শক্ত মেসেজ পৌছায় যে ভবিষ্যতে গন অভিবাসন নেয়ার চেষ্টা প্রতিরোধ করা হলে কেউ যেন তাদের দোষারোপ না করে। কিন্তু লক্ষ লক্ষ লোক যদি ভারতের সীমান্তে গিয়ে উপস্হিত হয় তবে বুলেট তাদের বেশিক্ষন ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।
৫) সমস্যা মোকাবেলায় গৃহিত পদক্ষেপঃ এই সমস্ত সমস্যা সমাধানে একটা দেশ কি ধরনের পদক্ষেপ নেয় সেগুলো একটি দেশের টিকে থাকার জন্য সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে। এই সমাধান গুলো পরিবেশের সাথে সম্পর্কিত হতেও পারে আবার নাও পারে। দেশটি যে পদক্ষেপ নেবে তা নির্ভর করে তার অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক প্রতিস্ঠান সমূহ এবং সাংস্কৃতিক মুল্যবোধের উপর। ঐ সমস্ত প্রতিস্ঠান এবং সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ প্রভাব ফেলে একটা দেশ সমস্যার সমাধান কিভাবে করবে বা করার চেস্টা করবে।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই দুর্ভিক্ষ, রোগ-বালাই, জীবন বিনাশী ঘূর্ণীঝড়, ভয়াবহ বন্যা, সামরিক ক্যু, রাজনৈতিক গুপ্তহত্যা, ভয়াবহ দারিদ্রতা, এবং বঞ্চনার স্বীকার বাংলাদেশের মানুষ। এতসব সমস্যা সত্বেও বাংলাদেশ হলো এমন এক দেশ যেখানে পরিবর্তনশীল জলবায়ুর সাথে মানিয়ে নেয়াটা সম্ভব বলে প্রতীয়মান হয়।সম্ভাব্য সব ধরনের লো-টেক
অভিযোজন প্রক্রিয়াই বাংলাদেশে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে। প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা জেনেভায় World Meteorological Organisation (WMO)র ১৬তম সন্মেলনে গতকাল বলেন “The fund, we envisage should be adequate, sustainable and easily accessible to meet the full cost of adaptation,” আমাদের মনে রাখতে হবে প্রতিটা অভিযোজনই প্রক্রিয়াই হলো একটি সাময়িক সমাধান মাত্র। আমাদের দরকার দীর্ঘমেয়াদী সমাধান। ১০ থেকে ৩০ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়লে এরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। এই সমস্যা সমাধানে আমাদের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিতে হবে।
NGO গুলোর সহায়তায় দুর্যোগকালীন বেসিক কিছু স্বাস্হ্যসেবা প্রদানের কাঠামো সরকার দাড় করাতে সক্ষম হয়েছে। তবুও সরকার জলবায়ু শর্নার্থীদের খাদ্য, বাসস্হান, কিংবা স্বাস্হ্যসেবা পুরোপুরি দিতে পারছে না। মাঠপর্যায়ের পরিবার পরিকল্পনা প্রোগাম ৭৭ সালের প্রতিপরিবার ৬.৬ টি শিশু থেকে বর্তমানে পরিবার প্রতি ২.৭ টি শিশুতে নামিয়ে আনতে সমর্থ হয়েছে যা কিনা আমাদের মত দরিদ্র, অশিক্ষিত একটি দেশের জন্য রেকর্ড। মহিলাদের অর্থনৈতিক এবং শিক্ষার সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। ১৯৯৫ সাল থেকে মহিলাদের বাসার বাইরে কাজে অংশগ্রহনের হার প্রায় দ্বিগুন বেড়েছে। শিশু মৃত্যুর হার নাটকীয় ভাবে কমে গেছে। ১৯৯০ সালে যা ছিলো ১০% তা এখন তা এসে দাড়িয়েছে ৪.৩% এ। নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মধ্যে এটা অন্যতম সর্বোচ্চ। বন্যা উপদ্রুত এলাকার লোকজন, বিশেষ করে চরাঞ্চলে, বন্যার সময় ক্ষতিগ্রস্হরা দ্রুত বাড়ীঘর খুলে আবার দিনে দিনেই তা নতুন জায়গায়, উঁচু ভূমিতে বাড়ি বানাতে সক্ষম হচ্ছে। লবনাক্ততা প্রতিরোধক ধান উৎপাদন এবং বাঁধ নির্মান করে নিচু চাষযোগ্য জমি রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছে। ফলশ্রুতিতে ধানের উৎপাদন ১৯৭০ সালের তুলনায় বর্তমানে প্রায় দ্বিগুন হয়েছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বাঁধ উপচে পড়ে পানি জমিতে একবার ঢুকে পড়লে তা একটি বিশাল অঞ্চলকে জলাবদ্ধ ভূমিতে পরিনত করে যা বছরের পর বছর অনাবাদী হয়ে পড়ে। তবে এই বাঁধগুলোকে বন্যা চলে যাওয়ার পর কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্হা করলে নতুন পলিযুক্তু হয়ে একই সাথে উর্বর ফসলী জমি এবং আগের চেয়ে উঁচু জমিতে পরিনত করতে পারে। দক্ষিণাঞ্চলের এটি করা অত্যন্ত জরুরী। এর ফলে নদীর নাব্যতাও বৃদ্ধি পায়, এবং জেলে সমাজও মাছের ফলন বেশী হওয়ার সুযোগ গ্রহন করতে পারে।
জনসংখ্যার নিয়ন্ত্রনই সবচাইতে সহজে আমাদের সব সমস্যার সমাধানের উপায় নয়। বস্তিগুলাতে গাদাগাদি করে থাকা মানুষগুলোর সাহায্য প্রয়োজন। আর তাদেরকে সাহায্য করার উপায় হলো তাদের দারিদ্র দূর করা এবং অবকাঠামোর উন্নয়ন করা। কঠোর জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রনও বাংলাদেশকে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না।
লক্ষ লক্ষ লোক ইতিমধ্যেই বিদেশে কাজ করে দেশের জন্য একটা উল্লেখযোগ্য রেমিট্যান্স নিয়ে আসে। বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ ভারত সহ অন্যান্য দেশের সরকারের সাথে ইমিগ্রেশন পলিসিতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা যাতে করে অন্তত পক্ষে শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠির একটা বিরাট অংশ অভিবাসনের সুযোগ পায়। অনেকটা পরিকল্পনা করেই মেধা পাচার করতে হবে যাতে উভয় দেশই এ থেকে লাভবান হয়। আর পার্বত্য চট্টগ্রামের উপস্হিত জলবায়ু শরনার্থীদের কারনে পাহাড়ী-বাঙালী সংঘর্সের মাত্রা যে আরও অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য। লক্ষ লক্ষ জলবায়ু শরনার্থীর আগমনে সেখানকার জমি এবং সম্পদ নিয়ে টানাটানির ফলে সেখানে তৈরী হতে পারে জাতিগত বিদ্বেষ যা কিনা আমাদের ঠেলে দিতে পারে রুয়ান্ডার মত পরিস্হিতির দিকে। যদি জলবায়ু পরিবর্তনের সবচাইতে খারাপ অবস্হার সম্মুখীন হওয়ার আগেই আমরা ৮ থেকে ২০ মিলিয়ন লোককে অন্যান্য দেশে অভিবাসন করাতে সক্ষম হই তবে হয়ত একটা ভয়াবহ পরিস্হিতি সামাল দেয়া সম্ভব হবে।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মানুষের মত আমাদের ভবিষ্যতের দিকে তাকানোর সুযোগ নেই কারন আমাদের বর্তমানটাই হলো অন্যদের ভবিষ্যত। আমরা এখনই জনবহুল এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলাফল দেখতে পাচ্ছি চোখের সামনেই। বঙ্গোপসাগরের উচ্চতা ইতিমধ্যেই কিছুটা বেড়ে গেছে। উপকূলীয় অঞ্চলের জলাশয়গুলো লবনাক্ত হয়ে পড়েছে। নদীবাহিত বন্যা আরও ধ্বংসাত্মক আকার ধারণ করেছে, ঘূর্ণিঝড় গুলো আরও অনেক বেশি শক্তি নিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হানছে। প্রতিদিন হাজার হাজার লোক ঢাকা শহরে এসে উপস্হিত হচ্ছে। ঢাকা শহরে এখন আর নতুন মানুষের স্হান দেয়ার মত অবস্হায় নেই। এ শহর এখনই মানুষের ন্যুনতম চাহিদা পূরন করতে অক্ষম। আমাদের সবচাইতে বড় ভুল চেস্টা হবে যদি আমরা সব সমস্যার মাঝ থেকে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ন সমস্যাটি খুঁজে বের করার চেস্টা করি। যে কোন একটি সমস্যার সমাধানে বিফল হলেই আমাদেরকে তা বিপদজ্জনক অবস্হায় ফেলে দিতে পারে। পরিবেশ সমস্যার সমাধানে অবশ্যই হবে, আমাদের ছেলে মেয়েরা বেঁচে থাকতেই হবে। এখন কথা হচ্ছে সেই সমাধানকি আমাদের নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোন ভাল উপায়ে হবে নাকি যুদ্ধ-বিগ্রহ, গনহত্যা, দুর্ভিক্ষ, রোগ-বালাই, অথবা মহামারীর মাধ্যমে হবে। যার ফলাফল হবে বাংলাদেশ একটি বিফল রাস্ট্রে পরিনত হওয়া।
তথ্যসূত্র:
1. Collapse: How Societies Choose to Fail or Succee – By Jared Diamond
2. The Coming Storm – By Don Belt National Geographic May, 2011
3. Population 7 Billion – By Robert Kunzig; National Geographic, April, 2011.
4. কমছে আবাদি জমি, বাড়ছে খাদ্য অনিশ্চয়তা – সাহারা তুষার
5. Climate Change Impacts and Responses in Bangladesh – Saleemul Huq and Jessica Ayers
6. EARTHQUAKE DATABASE AND SEISMIC ZONING OF BANGLADESH By MD Hossain Ali
-হোরাস আহমেদ
তথ্য প্রযুক্তিবিদ, টরন্টো, কানাডা।