মহাকাশের সবচেয়ে বড় গ্যালাস্কির সন্ধান
‘গ্যালাক্সি ‘ শব্দটির সাথে আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত। গ্যালাক্সি শব্দটি শুনলেই আমাদের সামনে না হয় ফোনের মডেল আর জ্যোতির্বিজ্ঞান প্রেমী হলে ভেসে ওঠে সর্পিলাকার একবিশাল জগৎ যেখানে হাজার হাজার নক্ষত্র কোনো বৃহৎ কৃষ্ণহ্বরকে কেন্দ্র করে ঘুরছে।
গ্যালাক্সি জিমিসটাই বিশাল তবে এর মধ্যেও রয়েছে একজন আরেকজনের চেয়ে বিশাল হওয়ার প্রতিযোগিতা। এখন পর্যন্ত আমাদের জানা সবচেয়ে বড় গ্যালাক্সির নাম ছিলো IC 1101.
কিন্তু সম্প্রতি এরচেয়ে প্রায় 4 গুণ বড় এবং এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় গ্যালাক্সির সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা এটির নাম দিয়েছেন অ্যালকিউনেস (Alcyoneous).
অ্যালকিউনেস হলো গ্রিক আকাশের দেবতা ওরেনাসের পুত্র। তার নামেই এই গ্যালাক্সির নামকরণ করা হয়েছে।
এটি পৃথিবী থেকে ৩ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত একটি রেডিও গ্যালাক্সি। রেডিও গ্যালাক্সি বলতে সেসকল গ্যালাক্সিকে বোঝায় যাদের কেন্দ্রে একটি অ্যাকটিভ ব্ল্যাকহোল বিদ্যমান। এদেরকে অ্যাকটিভ নিউক্লিয়াসও বলে।
এই ধরনের গ্যালাক্সির কেন্দ্রে যে ব্ল্যাকহোলগুলো থাকে সেগুলো সুপারম্যাসিভ বা অতিবৃহৎ হয়। এদের কেন্দ্রে যখন নানা পদার্থ প্রবেশ করে তখন ব্ল্যাকহোলগুলোর দুটো বিপরীত পাশ দিয়ে অত্যন্ত দ্রুতে বেগে রেডিও জেট বের হয়। যা অনেক দূর পর্যন্ত যাবার পর কুন্ডলী আকার ধারন করে।

অ্যালকিওনাস গ্যালাক্সির এই কুন্ডলীটিই এখন পর্যন্ত আবিস্কৃত সবচেয়ে বৃহৎ। এটির কুন্ডলূর ব্যাস আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির প্রায় ১৬০ গুণ বড় বা ১৬ মিলিয়ন আলোকবর্ষ লম্বা। কি বিশাল একবার ভাবুন?
এই কুন্ডলী বাদ দিলে কিন্তু ‘অ্যালকিওনাস‘ এতো বিশাল নয় একটি সাধারণ গ্যালাক্সির মতোই। কিন্তু কুন্ডলির কারণে এতো বড়।
এখন প্রশ্ন হলো একটি সাধারণ গ্যালাক্সির এতো বড় এবং এতো দূরত্ব পর্যন্ত জেট গেলো কিভাবে।
এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা দুটো বিষয়ের কথা ভাবছেন,
১) হতে পারে এটি কোনো আন্তমহাকাশীয় জাল বা কসমিক ওয়েবের অংশ।
২) আর হতে পারে এটির চারিদিকে পদার্থের ঘনত্ব অনেক কম বা এটি একটি ভায়োডের মধ্যে আছে। ‘ভায়োড’ হলো মহাকাশের ফাঁকা অঞ্চল যেখানে পদার্থের পরিমান তুলনা মূলক কম। আর যেহেতু পদার্থের পরিমাণ কম তাই রেডিও জেট অনেক দূর যেতে পেরেছে।
এখন আসল কারণ কি তা সামনে জানা যাবে। আর এটা জানা গেলে আদি গ্যালাক্সির জন্মের অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে।
লেখক: অনিক কুমার সাহা