যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স ৫০ টি বুম কোম্পানীর ওভারচার সুপারসনিক জেট কেনার ঘোষনা দিয়েছে। এগুলো প্রস্তুত হয়ে গেলে ২০২৯ সাল নাগাদ আবার শব্দের চেয়ে দ্রুত বেগের ফ্লাইট চালু হবে। ইতিপূর্বে কনকর্ড বিমানগুলো কয়েকদশক ধরে যাত্রীবহন করেছিল শব্দের চেয়ে দ্রুত বেগে, কিন্তু নানাবিধ সমস্যায় সবগুলো কনকর্ড বিমানকে অবসরে পাঠানো হয়।
শব্দোত্তর গতির বিমান নিউইয়র্ক হতে লন্ডন ভ্রমনের সময় অর্ধেকে কমিয়ে আনে। সাধারণ ফ্লাইটে যেখানে সাত ঘন্টা সময় লাগে সেখানে কনকর্ডে সময় লাগত সাড়ে তিন ঘন্টা। কিন্তু তবুও ২০০৩ সাল নাগাদ কনকর্ডের সব ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়। উচ্চ জ্বালানী খরচ, টিকেটের উচ্চমূল্য, ওবং উচ্চ রক্ষণাবেক্ষণ খরচের কারণে এই ফ্লাইট বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ে। তাছাড়া শব্দের গতি অতিক্রম করার সময় সনিক বুমের কারণে বিকট শব্দ তৈরি হয়, যার কারণে অনেক শহর কর্তৃপক্ষ শহরের উপর দিয়ে এইধরনের বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করে দেয়। যদি বুমের উড়োজাহাজগুলোকে ব্যাবসাসফল হতে হয় তাহলে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করেই তা করতে হবে।
শব্দের চেয়ে দ্রুত গতিতে চলার কারণে এই উড়োজাহাজগুলোকে সুপারসনিক বলা হয়। শব্দের চেয়ে দ্রুত গতি অর্জনের জন্য এদেরকে সাউন্ড ব্যারিয়ার বা শব্দ বাঁধ অতিক্রম করতে হয়, যার জন্য দক্ষ এ্যারোডায়নামিক ডিজাইন প্রয়োজন। তাছাড়া উচ্চ ক্ষমতার এবং কর্মদক্ষ ইঞ্জিনের ডিজাইনও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গতি অর্জনের জন্য ইঞ্জিনকে উচ্চ হারে জ্বালানী পোড়াতে হয়, যা কনকর্ডরের ব্যার্থতার অন্যতম কারণ। বুমের উড়োজাহাজগুলোকে এদিক দিয়েও মিতব্যয়িতা অর্জন করতে হবে।

কলোরাডো ভিত্তিক এই কোম্পানীটি ইঞ্জিন হিসেবে টার্বোজেট এবং টার্বোফ্যানের মাঝামাঝি ধরণ ব্যবহার করার কথা ভাবছে। টার্বোজেট ইঞ্জিন উচ্চ গতিতে চলার সময় এর সম্পূর্ণ থ্রাস্ট নির্গত গ্যাস হতে সংগ্রহ করে। অপরদিকে টার্বোফ্যান ইঞ্জিন পাখার মাধ্যমে ত্বরণ সৃষ্টি করে।
উচ্চগতিতে চলার সময় বিকট শব্দ করায় সুপারসনিক বিমানকে স্থলভাগের উপর দিয়ে চলার অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে যথাযথ এ্যারোডায়নামিক ডিজাইন তৈরি করতে পারলে এই সমস্যা হতে উত্তরণ ঘটতে পারে। নাসার উদ্ভাবিত একটি প্রযুক্তি কনকর্ডের ১০৫ ডেসিবেল শব্দকে ৭৫ ডেসিবেলে নিয়ে আসতে পারে, যা একটি ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের শব্দের সমান।
তাছাড়া বুম জ্বালানী সমস্যা সমাধান নিয়েও কাজ করছে। এটি পরিবেশবান্ধব জ্বালানী তৈরি নিয়ে কাজ করছে যা প্রচলিত জ্বালানী সরবরাহ ব্যবস্থার মাধ্যমেই সরবরাহ করা যাবে।
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক