বজ্রঝড়ে সৃষ্ট হাঁপানিতে অস্ট্রেলিয়ায় ৪ জনের মৃত্যু

0
195

গত ২১ নভেম্বর সোমবার অস্ট্রেলিয়ায় ‘হাঁপানি’ নামে বজ্রঝড়ে প্রায় ৪ জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও প্রায় ২০,০০০ মানুষ এই বিরল শ্বাসকষ্টের বজ্রঝড়ের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে। এটা এমন অদ্ভুত এক ঘটনা যেখানে আবহাওয়া পরিবর্তনের মাধ্যমে ব্যাপক হাঁপানির আক্রমণ ও শ্বাস-প্রশ্বাস সমস্যার সৃষ্টি হয়।

এই বজ্রঝড় সৃষ্টি হওয়ার শর্ত অনেকটা বিরল হলেও যখন এটা আঘাত হানে ফলাফল মারাত্মক হয়। আদ্র আবহাওয়ার মধ্যে ছোট পরাগরেণু কণা মিশে গিয়ে প্রচন্ড বেগে বয়ে চলা বাতাসের সাথে বিক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়ায় মূলত বিপত্তির সূচনা ঘটে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ যারা এই হাঁপানি বজ্রঝড়ের সম্মুখীন হয়েছিলো তাদের সবারই খড় আতংক (রাই ঘাসের অতি ক্ষুদ্র রেণুকণার মিশ্রণে সৃষ্ট) নামক একটি এলার্জি প্রতিক্রিয়া অনুভূত হয়। একেকটি রাই ঘাসের পরাগ প্রায় ৭০০ রেণু ধারণ করতে পারে। এগুলো ০.৬ থেকে ২.৫ um আকারের মতো ক্ষুদ্র হওয়ায় সহজেই ফুসফুসের নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছুতে পারে। বৃষ্টি অথবা আদ্র আবহাওয়ায় এই পরাগরেণুগুলো পানি শোষণ করে এবং আকারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। কখনও এরা ফেটে গিয়ে এই ক্ষুদ্র কণাগুলোকে বাতাসে মুক্ত করে দেয়।

উচ্চ গতির বাতাসের সাথে এই পরাগ রেণু অথবা কণাগুলো অনেক দূর অবধি ছড়িয়ে পড়তে পারে। শ্বাসগ্রহণের মাধ্যমে এই অতি ক্ষুদ্র কণা ফুসফুসে টেনে নেয়ার পর হাজার হাজার মানুষ শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগতে থাকে।

এই বিরল অবস্থার সর্বশেষ উদাহরণস্বরূপ গত মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদপ্তর মেলবোর্ন ও ভিক্টোরিয়াসহ আশেপাশের অন্যান্য এলাকায় ভয়াবহ বজ্রঝড়ের সতর্কবার্তা জারি করে। ঝড়টি ৩৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পৌছানোর প্রাক্কালেই শুরু হয়ে যায় এবং শহরগুলোকে রেকর্ড ঘন্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার গতির বাতাসের সাথে আঘাত হানতে শুরু করে। ঝড়ের দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি তুলনামূলক কমই ছিলো কিন্তু প্রচন্ড বেগের বাতাসই প্রধান বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

শহরের জরুরী সেবাগুলো ২০০০ এর অধিক ফোন কল পায় যাদের অধিকাংশই ছিলো হাঁপানির আক্রমণ এবং অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা। হাসপাতালগুলো তাদের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে গেছে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য।

সেন্ট ভিনসেন্ট হাসপাতালের মুখপাত্র ক্যাথি বোলেন এবিসি নিউজকে বলেন, “জরুরী বিভাগের দাক্তারগণ জানিয়েছেন, এরকম অবস্থা অতীতে কখনো তাঁরা পড়েননি। একই সমস্যা নিয়ে এতো সংখ্যক মানুষকে ভুগতেও তাঁরা কখনো দেখেননি।” [Science alert অবলম্বনে]

-শফিকুল ইসলাম

মন্তব্য করুন