এখনই আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই, তবে গবেষকগণ দেখেছেন, পৃথিবীর বায়ুমন্ডল হতে খুব ধীরে ধীরে অক্সিজেন হ্রাস পাচ্ছে। গ্রীনল্যান্ড এবং এন্টার্কটিকায় জমে থাকা বরফে আটকে পড়া বায়ুর বুদবুদ পর্যবেক্ষণ করে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী দেখেছেন অক্সিজেনের মাত্রা গত আট লক্ষ বছরে ০.৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
বায়ুমন্ডলের অক্সিজেন হ্রাস প্রবণতা ব্যাখ্যা করা খুব সহজ নয়- বায়ুমন্ডলের অক্সিজেন প্রতিনিয়ত মানুষ, পশুপাখি, গাছপালা এমনকি সিলিকেট পাথরের মাধ্যমে পুনরুৎপাদিত হচ্ছে। এই মূহুর্তে জমে থাকা বরফই বিদ্যমান অক্সিজেনের মাত্রা নির্ধারনের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাধ্যম।
গবেষক ড্যানিয়েল স্টলপার এই গবেষনা প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা এই পরীক্ষা কোনো ধরনের অনুমান বা ধারনা থেকে করিনি। পরীক্ষা চালানোর আগে আমরা জানতাম না অক্সিজেন বাড়ছে না কমছে না একই আছে। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সুস্পষ্ট প্রবণতা পাওয়া গেলো।”
পৃথিবীর বাস্তুসংস্থানের উপর প্রভাব চিন্তা করলে বায়ুমন্ডলের অক্সিজেনের এই পরিবর্তন এখনো গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে তারপরও একি গ্রহ বসবাসযোগ্য হতে হলে কেমন হতে হবে সেই বিষয়ক তথ্য এই ধরণের গবেষণা হতে পাওয়া যায়- বিশেষ করে আমরা যদি মঙ্গলে বসতি স্থাপন করতে চাই তাহলে এধরনের তথ্য কাজে লাগবে।
অক্সিজেন হ্রাসের কারণ হিসেবে ভূমিধ্বসের প্রবণতা বৃদ্ধিকে একটি কারণ হিসেবে অনুমান করা হচ্ছে। নতুন করে পলির স্তর উন্মুক্ত হয়ে পড়লে সেগুলোকে অক্সিডাইজ করার জন্য বায়ুমন্ডল হতে অক্সিজেন শোষিত হতে পারে। আরেকটি সম্ভাব্য কারণ হলো দীর্ঘমেয়াদি জলবায়ু পরিবর্তন। গত কয়েক মিলিয়ন বছর হিসেব করলে পৃথিবীর সার্বিক তাপমাত্রার সামন্য অবনমন হয়েছে, যদিও গত অর্ধশতাব্দীতে তাপমাত্রার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটেছে।
কিন্তু অর্ধশতাব্দীর আগের প্রেক্ষাপট চিন্তা করলে, মহাসাগরগুলোর তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমছিলো, যার ফলে বাস্তুতন্ত্র স্বাভাবিক রাখতে বায়ুমন্ডল থেকে অক্সিজেন টেনে নেওয়ার প্রবণতা হয়তো বেড়েছে প্রানীকূলের মধ্যে।
-বিজ্ঞান পত্রিকা ডেস্ক