চীনে জাগছে নতুন বন

0
580

গুজবটা তাহলে সত্যিই প্রমাণিত হলো । বছরের পর বছর বন কেটে শহর আর শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা চীন নাকি ‘এবার ফেরাও মোরে’ বলে মন দিয়েছে ঘা শুকোতে। বিভিন্ন প্রদেশে নতুন করে বনাঞ্চল বাড়াতে শুরু করেছে দেশটি । ধারণা করা হচ্ছে, চীনের এই ‘ফেরা’ আশা জাগাবে আরো অনেকের ভেতরেই।

শিল্পায়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলবে বনাঞ্চলের নিকেশ –এটা তো এখন এক সর্বজনীন সত্য । শিল্পায়নের পরও যেটুকু টিকে থাকে, ক্ষুধা মেটানোর জন্য কৃষিজমি সংগ্রহে উজাড় হয় সেগুলো। গত চার দশকে শিল্পায়নে চীনের অবিশ্বাস্য উন্নতি আর জনসংখ্যার যে ব্যাপক বিস্ফোরণ- তাতে চীনভূমির বনাঞ্চল যে ভালো নেই, সে খবর বাইরে থেকেও ভালোভাবেই টের পাওয়া যাচ্ছিল।

কিন্তু ইতিবাচক কথা শোনালেন নাসার পর্যবেক্ষকরা। নাসার ‘মডারেট রেজোল্যুশন ইমেজিং স্পেক্ট্রোরেডিওমিটার (মোডিস) জানাচ্ছে, গত ১০ বছর চীনের মোট বনাঞ্চলের ০.৩৮ অংশ ধ্বংস হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য অংশে বনের পরিমাণ বেড়েছে ১.৬ শতাংশ। হয়ত শতাংশের হিসাবে এটা লহুব একটা বেশি নয়। তবে বর্ধিষ্ণু বনের এই গোটা এলাকার আয়তন ১ লাখ ৬০ হাজার বর্গ কিলোমিটার বা ৬১ হাজার বর্গ মাইল। চীনের পাশাপাশি ফিলিপাইনেও বনাঞ্চলের উন্নতি দেখতে পেয়েছে নাসা।

কার্বন নিঃসরণ কমানো এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধে চীন নিজ দেশে যা করছে তার প্রশংসা করলেও আমেরিকার মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. আন্দ্রে ভিনা বলেন, ‘সমস্যাটা হলো এই চীনেই কাঠ রপ্তানি করার জন্য পাশ্ববর্তী দেশগুলো প্রতিনয়ত নিজেদের বনাঞ্চল উজাড় করছে। আমরা সবাই চীন থেকে পণ্য কিনি। চীন কিন্তু নিজেদের কাঠজাত দ্রব্য আমদানি-রপ্তানি কমায়নি। যেটা পরিবর্তন হয়েছে, তা হলো নিজ দেশেরটা বদলে এখন বাইরের কাঁচামাল ব্যভার করছে তারা।’

চীন সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ২০২০ সালের মধ্যে ৯৯ মিলিয়ন একর জমিতে বনাঞ্চল পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। ১৯৯৮ সালে প্রলয়ংকারী এক বন্যার পর চীন বনাঞ্চল ধ্বংস করাকে একটি বড় সমস্যা হিসাবে দেখতে শুরু করে। এরপর প্রায় ২০ বছর ধরে চলেছে বন সংরক্ষণ আর প্রসারণের নীতি।

বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, গোটা পৃথিবীতে বনজাত দ্রব্য ব্যবহারের প্রবণতা পড়তিত দিকে। ২০১৩ সালে পৃথিবীতে কাগজের সর্বোচ্চ ব্যবহার হয়, এরপরই কাগজের চাহিদা ধীরে ধীরে কমে আসছে  । কাঠের ব্যবহার এখনো বাড়তে থাকলেও কয়েকটি নিয়ামকের বিবেচনায় বিজ্ঞানীরা বলছেন এটাও খুব শীঘ্রই একই পথে হাঁটতে শুরু করবে।

মাহির দায়ান

মন্তব্য করুন